শুনেছি ভোরের গল্প নাকি সত্যি হয় পড়ুন বিস্তারিত। কল্পনা থেকে অনুপ্রেরণা।
আজ স্বপ্নে দেখলাম ডিবালার গোলে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। পুরো টুর্নামেন্টে মেসি বরাবরের মতোই একাই আর্জেন্টিনাকে টেনেছে, কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ৬ গোল করে গোললিস্টে সবার উপরে কিং এর নাম দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেমী ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে খেলতে গিয়ে বস পায়ে আঘাত নিয়ে মাঠ ছাড়ছে, কোচ সাম্পাওলির তো মাথায় হাত , গ্রেটেস্ট শো অফ দি আর্থ এর ফাইনালে তবে কি তিনি মেসিকে পাবেন না দলে?
অবশেষে মেডিকেল রিপোর্টে ইনজুরি ধরা পড়লো এবং কিংকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়, কিন্তু মেসিতো বিশ্রাম নিতে নারাজ। এতদূর দলকে টেনে এনেছেন, আর এখন তীরে এসে তরী ডুবে যাবে সেটাতো হতে দেয়া যায় না। অবশেষে তার অনুরোধে কোচ তাকে প্রাথমিক স্কোয়াডে রাখলেন এবং বেঞ্চে বসিয়ে রাখলেন। ফাইনাল খেলাটা হচ্ছিলো, ফ্রান্স বনাম আর্জেন্টিনার মধ্যে। উভয় পক্ষই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করছিলো, ম্যাচটা খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলো। হাফ টাইম হয়ে যায়, কিন্তু স্কোরলাইনে ০-০ দেখাচ্ছে। বিরতির পরে কোচ দ্রুত ২ টি পরিবর্তন করেন, এর মধ্যে মিডফিল্ডে বিগলিয়াকে তুলে পারেদেস কে এবং সালভিওকে তুলে পাপ্পু গোমেজকে নামান।
ফরোয়ার্ডে আগুয়েরো, ইকার্দি এবং ডিবালা থাকতেও গোল এর দেখা মিলছিলো না, বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো মেসির জন্য তাহলে কি মেসিকে ফাইনালে দেখতে পাবো না, তার স্বপ্নটা কি পূরণ হবে না। শেষ ১ টাই সাবস্টিটিউট বাকি ছিল, ৮১ মিনিট এর সময় ডাগআউটে হিগুয়াইন এবং কোরেয়াকে ওয়ার্মআপ করতে দেখা যাচ্ছে, দর্শকরা আশা ছেড়ে দিয়েছে , এবারো তারা নিরাশ হয়েই ঘরে ফিরবেন।
দর্শকদের পূর্বের ফাইনালগুলোর কথা যেন মনে করিয়ে দিলো হিগুয়াইন, পুরো টুর্নামেন্টে অ্যাভারেজ খেলে ফাইনালে গিয়ে হাড়ি হাড়ি মিস এর ঘটনা। কিন্তু একি, একটি শিশু গ্যালারি থেকে চিৎকার দিয়ে উঠলো, "লুক, দেয়ার হি ইজ, মাই আইডল, মেসি". বাচ্চাটির চিৎকারে এই গ্যালারি থেকে অন্য গ্যালারি, পুরো স্টেডিয়াম এর নজর পড়লো মেসির উপর। তাহলে কি মেসি খেলবেন? সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ৮৪ মিনিটে কোচ সাম্পাওলি ইকার্দির বদলে মেসিকে নামালেন।
খেলা তখন এক্সট্রা টাইমের দিকে এগোচ্ছে, ৮৯ মিনিট এর খেলা চলছে। হটাৎ ডিফেন্স থেকে মাসচেরানো মেসিকে উদ্দেশ্য করে লং পাস দিলেন, মেসির পায়ে ব্যাথা এরপরেও বল নিয়ে দুর্বার গতিতে ছুটে চলেছে, একে একে পগবা, কানতে, কুরজায়া, ভারানে কে কাটিয়ে ডি-বক্স এর সামনে চলে এসেছেন, এখন তার সামনে শুধু স্যামুয়েল উমতিতি! অপেক্ষায় আছেন, কবে একজন প্লেয়ার সামনে আসবে, হুম ওই একজন প্লেয়ার আসলো তখনি মেসি উমতিতির পায়ের নিচ দিয়ে বল নিয়ে গিয়ে অর্থাৎ নাটমেগ করে ডি-বক্সে ঢুকে পড়লো এবং ওই প্লেয়ারটাকে পাস দিয়ে দিলো, গোলকিপার লরিসকে একা পেয়ে সেও জালে বল ট্যাপইন করে দিলো।
পুরো ফ্রান্স দল মাটিতে লুটিয়ে পড়লো, তাদের পাশাপাশি আর্জেন্টিনা এবং বিশেষ করে মেসিও মাটিতে শুয়ে পড়লো। নিজের চোখে সে বিশ্বাস করতে পারছেনা সে কি দেখছে! আবারো মেসির চোখে জল দেখা যাচ্ছে, মেসি কাঁদছেন, তবে এবার দুঃখে না, বিশ্বকাপ জয়ের খুশিতে। যে ট্রফিটার জন্য মানুষ তাকে এতো পরিমান ট্রল করেছে, আজ অবশেষে সেটা তার হাতে উঠলো। আর শেষ বাঁশি বাজার পরেই মেসি জড়িয়ে ধরলেন সেই ডিবালাকে, যার গোলে আর্জেন্টিনা ফাইনালে জয়লাভ করে।
এরপরে ঘুম ভেঙে গেলো এবং বুঝতে পারলাম যে ওটা স্বপ্ন ছিল, সত্যিই যদি ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয় তবে সৃষ্টিকর্তার নিকট চাইবো আমার এই স্বপ্নটা যেন উনি পূরণ করে দেন
Comments
Post a Comment