বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সাইকেডেলিক,হার্ড এবং প্রগ্রেসিভ রক ব্যান্ড নোভা।১৯৮৬সালের এই ব্যান্ড সম্পর্ককে জানতে পড়ুন।

আপনি কি জানেন বাংলার কোন ব্যান্ড কে তৎকালীন স্বৈরাচার সরকার বাংলাদেশ টেলিভিশনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে?? 
হ্যা আজ বলছি এমনি এক সাহসী ব্যান্ড এর কথা।
সেই ব্যান্ডটির নাম হচ্ছে " নোভা " ব্যান্ড। হয়তো নাম শুনে থাকতে পারেন। এই ব্যান্ডের আত্মপ্রকাশ ঘটে ৮০'র দশকের শেষ ভাগে। আর তখন ই ব্যান্ডটি যাত্রা শুরু করে।ব্যান্ডটি ১৯৮৬ সালে আহমেদ ফজল এর হাত ধরে ঢাকায় গঠিত হয় এই সাইকেডেলিক,হার্ড এবং প্রগ্রেসিভ রক ধাঁচের এই ব্যান্ডটি। এই ব্যান্ডটি যাত্রা শুরু পর তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।আর সেই       ৮০'র দশকের সেই সাড়া জাগানো বাংলার এই ব্যান্ডটি এক্টিভ আছে এখনো।

বর্তমান লাইন আপ - 
১- আহমেদ ফজল ( লিড গীটারিস্ট,লিরিসিস্ট,কমপোজার ও ভোকাল )
২- পাপ্পু (কিবোর্ড)
৩- নুর (বেজ)
৪- লুকান (ড্রামার)
৫- সৌরেন (গীটার ও ব্যাক ভোকাল)
আহমেদ ফজল  হচ্ছে এই ব্যান্ড এর মূল কান্ডারি। আর তার হাত  ধরে গঠিত হয় এই  নোভা ব্যান্ডটি,এখন বর্তমানে নোভা ব্যান্ড এর লিড গীটারিস্ট,লিরিসিস্ট,কমপোজার ও ভোকাল হিসেবে কাজ করছেন তিনি। 

এই ব্যান্ডটির সবথেকে অবাক করা একটা তথ্য হচ্ছে ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম প্রকাশ্য রাজাকারদের বিরুদ্ধে গানে গানে গর্জে উঠেছিল নোভা ব্যান্ড ও ফজল ।সেই গানটি তখন দেশের জনগণের মাঝে দারুন সাড়া পেয়েছিলো। বাংলাদেশ টেলিভিশনে নোভা ব্যান্ড এর এই গানটি প্রকাশের পরপরই তৎকালীন স্বৈরাচার সরকার বাংলাদেশ টেলিভিশনে নোভা ব্যান্ড কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। কিন্তু ব্যান্ডটি কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বেশিদিন বহাল রাখতে পারে নি তার পরের বছরে ১৯৯১ সালে প্রথম গণতান্ত্রিক সরকার সেই নিষেধাজ্ঞা ব্যান্ডটির উপরে থেকে তুলে নেয়। এবং নোভা ব্যান্ড ও ফজল কে সারা বাংলাদেশে প্রকাশ্য গানটি পরিবেশন করার অনুমতিও দেয়া হয় ।তার পর থেকে আর কোনো বাধা কারাই এগিয়ে জাক্কা ব্যান্ডটি বর্তমানে ও। 

এই ব্যান্ডটির সাথে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নিযুক্ত ছিল অনেক মেম্বার তাদের তালিকা দেয়া হলো :

১- ভাল ( বেজ ও ভোকাল)
২- তোলো ( কিবোর্ড এন্ড ভোকাল) 
৩- ময় (ড্রামার)
৪- শাকিল খান (ভোকাল)
৫- চারু ( বেজ এন্ড ভোকাল)
৬- জয় (বেজ)
৭- রুবেল (ড্রামার)
৮- অপু (কিবোর্ড)
৯- পাপ্পু (কিবোর্ড এন্ড ভোকাল)
১০- শ্রি (ড্রামার এন্ড ভোকাল) 
১১- ইমরান (গীটার স্নড ভোকাল)
১২- এন্টোনি সামিউল মাকসুদ (ড্রামার)


কি নাম গুলো শুনে অবাক হচ্ছে। আসলেই এই ব্যান্ডের আগের মেম্বার গুলোর নাম অবাক করার মতোই।আর এই ব্যান্ড এর মধ্যে এসেছিলো অনেক গুলো ভোকাল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যান্ডটি ভোকাল সংকটে পড়েছিল তা বলবো না তবে ভোকাল দের ব্যান্ড ছেড়ে  চলে যাবার প্রবতন chilo এই ব্যান্ডেই বেশি। তবে তবু ও ব্যান্ডটি এখনো তাদের আগের অবস্থান ধরে রেখেছে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।  

নোভা ব্যান্ডটি এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৭ টি স্টুডিও অ্যালবাম রিলিজ করেছে তাদের অ্যালবাম এর তালিকা দেয়া হলো :

স্টুডিও অ্যালবাম গুলো হল -

১- আহবান (১৯৮৮)
২- রাজাকার এর তালিকা চাই (১৯৯০)
৩- স্কুল পলাতক মেয়ে (১৯৯৩)
৪- ভাইসো (১৯৯৬)
৫- নোভা ৯৯ (১৯৯৯)
৬- ঠিকানা (২০০২)
৭- রিটার্ন অভ দ্যা নোভা (২০১০)

নোভা ব্যান্ডটি তাদের প্রথম অ্যালবাম আহবান যখন ১৯৮৮ সালে রিলিজ করে তখন তাদের এই অ্যালবাম এর টাইটেল ট্র্যাক মাদকাসক্ত গানটি দারুন জনপ্রিয়তা পায়। আর এই অ্যালবাম এর এই গানটির জন্য সেই সময়ে তাদের পুরষ্কৃত করা হয়।তারপর তারা প্রায় ২ বছর পর ১৯৯০ সালে তাদের দ্বিতীয় অ্যালবাম রিলিজ করে তাদের দ্বিতীয় অ্যালবাম এর নাম ছিল রাজাকার এর তালিকা চাই। তাদের এই অ্যালবাম টি ও দারুন জনপ্রিয়তা পায় তবে তারা তাদের এই অ্যালবাম এর টাইটেল ট্র্যাক রাজাকারদের বিরুদ্ধে ছিল. আর সেই টাইটেল ট্র্যাক এর জন্য নোভা ব্যান্ড কে বাংলাদেশ টেলিভিশনে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে তৎকালীন স্বৈরশাসক সরকার। 

এছাড়া ও আরো কিছু মিক্সড অ্যালবাম আছে নোভা ব্যান্ড এর সেগুলোর তালিকা দেয়া হলো :-

১- শক্তি
২- ঘৃনা
৩- ক্ষমা
৪- শেষ দেখা
৫- ওরা এগারোজন
৬- ব্যাথা

নোভা ব্যান্ডের অন্যতম জনপ্রিয় গানের কিছু তালিকা দেয়া হলো 
  • প্রতিমার ছবি
  • স্বপ্নরানী
  • স্কুল পলাতক মেয়ে
  • পদ্মার পাড়ে
  • ভালোবাসার কাকতাড়ুয়া
  • দ্যুতি
  • স্বপ্নের বাংলাদেশ 
  • রাজাকার এর তালিকা চাই
  • আহ্বান 

Comments

Popular posts from this blog

শাবনূরের লাইফস্টাইল অজানা অনেক তথ্য I আসল নাম | উচ্চতা I ওজন I শারীরিক পরিমাপ | বয়স | পড়ালেখা | স্বামী | ক্যারিয়ারের অর্জন | বাড়ি | জীবনী এবং উল্লেখযোগ্য সিনেমায় ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্ককে জানতে অবশ্যই পড়ুন

বাংলাদেশী ব্যান্ডের আন্ডাররেটেড গান সমূহের তালিকা দেয়া হলো । নতুন কিছু গানের স্বাদ পেতে অবশ্যই পড়ুন।

পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ২০ টি বস্তু, যা এতটাই দামী আপনি শুনে অবাক না হয়ে পারবেন না,জানতে অবশ্যই পড়ুন।