শুনুন বিশ্বসেরা গোলকিপার জিয়ানলুইজি বুফনের কথা।

আজ থেকে প্রায় একযুগ আগে এক মহান ফুটবল খেলোয়াড় হারিয়ে যেতে বসেছিলো। না কোন জটিল শারিরীক রোগে আক্রান্ত হয়ে নয়, মানসিক কারনে। তিনি হয়ত ভেবেই নিয়েছিলেন খেলাটাই বুঝি ছেড়ে দিবেন। সবসময় তার মনে ভয় কাজ করত তখন, কিরকম নিঃস্ব মনে হত নিজেকে,ভুগছিলেন ডিপ্রেশনে। কোন কিছুই ভাল লাগত না তার। ভাগ্যিস কানাভারো বলেছিলো তাকে ডাক্তার দেখাতে পরিবারকে সবকিছু খুলে বলতে নাহয় দেখা হত না হয়ত আজ্জুরিদের আর একটা বিশ্বকাপ জয় জুভেন্টাসের উত্তান ভয়ংকর এক লীডারকে। বলছিলাম জিয়ানলুইজি বুফনের কথা। হ্যা তিনি হয়ত ০৪-০৫ এ ফুটবল ছেড়ে দিতেন। আমরা হয়ত দেখতাম না আর একটা ইতালিয়ান রূপকথা। বাইনোকনেরিদের এরকম উত্তানের পিছনে যে লীডার আছে তাকে। , তার এ ডিপ্রেশন এর কারন কি ছিলো। ০৩ এর চ্যাম্পিয়নস লীগে অল ইতালিয়ান ফাইনাল এ পেনাল্টি শুট আউট হারার ফলে হঠাতই ডিপ্রেশন তাকে পেয়ে বসে। অথচ পুরো টুর্নামেন্টে তার গোলবার ছিলো প্রায় অভেদ্য। ফাইনালে অথচ তার কোন দোষ ই ছিলো না। অন্যদের ব্যর্থতা র কারনে হারতে হয়েছে সিএল ফাইনাল। আর সেই হারের কারনেজ তাকে ডিপ্রেশন পেয়ে বসেছিলো। পরে বিভিন্ন কন্সালটেন্ট আর পরিবার ও সতীর্থদের সহযোগিতায় তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়। , ওই ইন্সিডেন্ত এর পর ০৬ এ বিশ্বকাপ জয়, ১২ এ ইউরো রানার্স আপ, গত সিজনে ক্লাব লেভেলে দ্বিমুকুট জয়, টানা চারটি স্কুডেটি জয় করেছেন। প্রভাবলি সাথে যোগ হতে পারে আরো বেশ কিছু সফলতার পালক। ভাবুন তো যদি তার ক্যারিয়ারটা সেখানেই শেষ হয়ে যেত তাহলে কি হত???? , তার ফুটবল ক্যারিয়ারে শুরুটা কিন্তু জালের সামনে বা বারের নিচে থেকে শুরু হয় নি। শুরু হয়েছিলো আউটফিল্ডার হিসেবে। বিশেষ করে মিডফিল্ডার হিসেবে। অবশ্য ক্যামেরুনিয়ান গোল্কিপার টমাস এন কোনোর দ্বারা ইন্সপায়ার্ড হয়েই হতে তচচেয়েছিলেন গোল্কিপার। তার এই ইন্টারেস্ট সম্পর্কে জানা ছিলো ক্লাব কতৃপক্ষের ও। পরে পার্মার ইউথ কিপার ইঞ্জুর্ড হলে তার ইন্টারেস্টের কারনে তার এটলেটিসিজমের কারনে আর তার বিশাল দেহের কারনে তাকে কিপিং পজিশনে নিয়ে আসা হয়েছিলো। আর এরপরই শুরু বুফননামার। ধীরে ধীরে দলের স্টার্টিং কিপার এরপর সিনিয়র দলের হয়ে অভিশেক। পরে ৯৭ এ তার ইম্প্রেসিভ পারফরমেন্সের কারনে জাতীয় দলে ডাক। ২০০০ এ প্রায় ৫৩ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে জুভেন্টাসে যোগ। যা এখন যেকোন গোল কিপারের জন্য ট্রান্সফার ফি এর রেকর্ড। ০৩ এর চ্যাম্পিয়নস লীগ এ অমানুষিক পারফরমেন্স দিয়ে দলকে তুলেন ফাইনালে আর ফাইনালে ৩-২ এ ট্রাইব্রেকারে হেরে যাওয়া। , , ০৬ এ এসে ম্যাচ ফিক্সিং এর অভিযোগে জুভেন্টাস কে নামিয়ে দেয়া হয় সিরি বিতে আগের দুইটি স্কুডেটি চিনিয়ে নেয়া হয়। দল থেকে চলে যায় ক্যানাভারো, এমারসন সহ সকল বড় তারকারা। সবাই ধরেই নিয়েছিলেন হয়ত তিনিও বিগ মানি মুভ এর আর একটা ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন। না কোথায় তিনি থেকেই গেলেন জুভেন্টাসে। দেখালেন দলের দুর্দিনে লয়ালিটি, অথচ তখন তিনি তার পিকফর্মে। অসাধারন সব স্টপ অসাধারন সেভ উপহার দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি থেকেই গেলেন জুভেন্টাসে আর নতুন জুভ গড়ার পিছনের মুল স্তম্ভ হিসেবে দাড়িয়ে ছিলেন এবং তার লক্ষ্যে তিনি শতভাগ সফল।০৬ এর বিশ্বকাপ এ অল স্টার্ড জার্মান টিম, স্পেন টিম, অপ্রতিরোধ্য ব্রাজিল, শিরোপা খরা ঘুচানোর ক্ষুধা নিয়ে পারফেক্টলি বেলেন্সড আর্জেন্টিনা ফেভারিট। বুড়োদের সমন্বয়ে গড়া ইতালি টিম যে প্রথম নক আউত রাউন্ড পেরোতে পারবে সে বাজি ধরবে এমন লোক খুব কম ছিল। অথচ যতই দিন গেছে একা হাতেই প্রায় দলকে নিয়ে গেছেন বিশ্বকাপের ফাইনালে। উল্লেখ্য সেমিতে জার্মানির বিপক্ষে লাস্ট মিনিট সুপারহিউম্যান সেভটা। যখন খেলার নির্ধারিত ৯০ মিনিট গড়িয়ে এক্সট্রা টাইমে তখন পর্যন্ত দলের সকল বিপদ সামলেছেন তিনি। কিন্তু সব থেকে বড় ঝড়টা থেকে দলকে রক্ষা করেন ১১৯ মিনিটে পোডলস্কির অসাধারন শটকে আউটস্ট্রেচড হয়ে সেভ করে যার পরক্ষনেই পিরলো সেই গোলটি করে আর এরপ্র দলকে ফাইনালে তুলে। ফাইনালে জিদানের হেড পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে রক্ষা করে দলকে জিতিয়ে দেন স্বপ্নের বিশ্বকাপ। আর জিতে নেন ইয়াসিন এওয়ার্ড আর সিলভার বল। , যদি ওই সেভটা না হত তাহলে হয়ত জার্মানরা জয়ে যেত ৫ বারের বিশ্বকাপ জয়ী বা ফ্রান্স দু বারের। এরপর জুভেন্টাসে একের পর এক সাফল্যগাথা। , যদি কেউ বলে গোলকিপারদের কাজ কি??? যে বুফন ককে ননিয়ে এএত ভাল ভাল ককথা বলতে হহচ্ছে??? হাত দিয়ে বল ধরা, গোল খাওয়া থেকে বাচানো ছাড়া আর কি ভাই??? না ভাই গোলকিপার হল আপনার লাস্ট লাইন অফ ডিফেন্স। এটা প্রায়শই বলা হয় এটাক আপনাকে ম্যাচ আর ডিফেন্স আপনাকে শিরোপা জিতাবে। আর গোলকিপার হল ওই ডিফেন্সের মধ্যমনি। তিনিঈ পারেন ডিফেন্ডারদের ভুল গুলো পুষিয়ে দিতে। সেভ এর মাধ্যমে। হ্যা বুঝলাম আশা করি। গোলকিপার এর গুরুত্ব। তো একজন গোলকিপারের কি কি ডিগ্রি থাকা দরকার আই মিন এট্রিবিউটস থাকা দরকার। পজিশনিং, রিফ্লেক্স, কাভারিং, , এন্টিসিপেশন,লীডারশিপ­ এইসব বিশেষ করে!!! , রখন যদি জিজ্ঞেস করা হয় বুফনের স্ট্রং পয়েন্ট কোনটাটা। প্রথমেই বলতে হয় তার পজিশনিং এর কথা। প্রভাবলি গোল্কিপারদের মধ্যে সব থেকে বেস্ট পজিশন সেন্স ওয়ালা প্লেয়ার। আর যার ফলে লং রেঞ্জ থেকে জেনারেলি বিট করা অনেক কঠিন। যদিও বা বয়সের সাথে সাথে সে স্পার্ক নেই তবুও হি ইজ ওয়ান অফ দ্য বেসট ইন দ্যট। , অন্যরা যখন এখানে নিজেকে সব থেকে বেশি অস্থির করে তুলেন তিনি সেখানে নিজেকে ব্যাক করেন শান'ত থাকার জন্য। দ্বিতীয় ত তার স্ট্রং পয়েন্ট তার এন্টিসিপেশন। তিনি খুব দ্রুতি বুঝতে পারেন প্রতিপক্ষ কি করতে চায়। যার কারনে ক্যারিয়ার ঘাটলে বেশ কিছু পয়েন্ট ব্লুয়ানক সেভস আর পেনাল্টি সেভ পাওয়া যাবে। আর পেনাল্টি বা সেট পিসে তিনি হলেন লেট রিএক্টর যার ফলে তিনি খুব ভালো পেনাল্টি সেভার। ৫টি মেজর টুর্নামেন্টের তিনটিতেই তার জয় আছে। যদিও বা যখন দরকার তখন খুব কুইক রিএকশন এ সেভ করতে পারেন। যখন আরো ইয়ং ছিলেন তখন সুইপার এর কাজটাও ভাল করতেন শুরুর দিকে তার কিছু কিছু খেলাতে ডিফেন্স লাইনের উপরেও তাকে বল নিয়ে পাওয়া গেছে। যদিও বা সুইপিং এর রোলটা নয়ারের মত পালন করেন নি কখন। আর এরজন্য ইতালিয়ান ডিপ ডিফেন্সিভ স্ট্রেটেজি রয়েছে। আর হ্যা গোলকিপার হিয়াএবে তার থেকে ভাল লিডার খুব কমই আছে। সবসময় দেখবেন তিনি ডিফেন্সলাইনকে কমান্ড করছেন অরগ্যানাইজ করছেন।এরকম একজন লিদার থাকলে ডিফেন্সের ভুল কম হয়। তার উপর তিনি খুব ভালো ড্রেসিং রুম কন্ট্রোলার যার গুরুত্ব চেলসি ফ্যানরা খুব ভালোই জানে। বার্সা ফ্যানদের ও জানার কথা। গোলবারের প্রতিটি কোনা কভার করার ক্ষমতাও খুব ভালো তার। , ইদানীং একটা ট্রেন্ড আছে গোল্কিপার অফ দ্য উইক, গোলকিপার অফ দ্য মান্থ,সেভ অফ দ্য মান্থ। তাকে এগুলোর কোনটিতেই পাওয়া যায় না। কিন্তু বছরশেষে যখন হিসাব করবেন বেস্ট গোলকিপার কে?? তখন টপ ৩-৫ এর মধ্যে তার নামটা থাকে। , এই ২০ বছরের ক্যারিয়ারে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় তার পিক ফর্ম কখন ছিল। তখন খুজতে কষ্ট হয়ে যাবে। বেটার টু সে,তিনি এই ২০ বছরের পুরো টা তেই পিকফর্মে ছিলেন। , এইখানেই তার গুন টা বেশি করে ফুটে উঠে। ২০ বছর ধরে এই ফর্ম ধরে রাখা খুব কঠিন। বিশেষ কিরে টপ ফ্লাইটে। হিসেব করলে ইতিহাসে সেরা ৫ দের একজন এব্যাপারে নিশ্চত কেউ দ্বিমত পোষন করবে না। , বার্থেজ, ডারসার, কান,দিদা, সিজার,ক্যাসিয়াস হতে শুরু করে হালের নয়ার,হার্ট,গিয়া,কর­্তোয়া,ব্রাভো সবার সাথে এই মানুষটার তুলনা হয়েছে হচ্ছে। বুঝতে পারছেন তিনি তিন প্রজন্মের সেরা। কতটুকু লংগেভিটি থাকলে এটা সম্ভব। , ফাইনালি তিনি এতদিনে এসে ১৮ এর বিশ্বকাপ এরপর অবসর এর ঘোশনা দিয়েছেন। হতে পারে এতদিনে তার অপুর্নতা সব ঘুচে যাবে।

Comments

Popular posts from this blog

শাবনূরের লাইফস্টাইল অজানা অনেক তথ্য I আসল নাম | উচ্চতা I ওজন I শারীরিক পরিমাপ | বয়স | পড়ালেখা | স্বামী | ক্যারিয়ারের অর্জন | বাড়ি | জীবনী এবং উল্লেখযোগ্য সিনেমায় ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্ককে জানতে অবশ্যই পড়ুন

বাংলাদেশী ব্যান্ডের আন্ডাররেটেড গান সমূহের তালিকা দেয়া হলো । নতুন কিছু গানের স্বাদ পেতে অবশ্যই পড়ুন।

পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ২০ টি বস্তু, যা এতটাই দামী আপনি শুনে অবাক না হয়ে পারবেন না,জানতে অবশ্যই পড়ুন।