রকের সাথে ফোকের দারুন মিশ্রনের নামই ব্যান্ড লালন।আজ বলবো লালন ব্যান্ডের কথা।
গানের দেশ বাংলাদেশ।জারি,সারি,ভা্টিয়ালি আর লোকসংগীতের অপূর্ব মিশ্রণে এ দেশের সোনার মাটি রঞ্জিত।এ দেশে জন্ম হয়েছে হাসন রাজার,জন্ম হয়েছে লালন সাঁই এর মতন গানের সাধকদের।আমরা এখন তাদের গান শুনি,তাদের গান গাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করি!
একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে যখন দেশে রক আর মেটাল মিউজিকে ইন্ডাস্ট্রি মুখরিত,যখন আর্টসেল,অর্থহীন,নেমেসিস,ব্ল্যাক,ক্রিপ্টিক ফেইটের নব জাগরণ ঘটছে ঠিক তখনি ঢাকার কিছু ছেলে-মেয়ে একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল!রক আর মেটালের সেই যুগে তারা ফোক রক ফিউশন নিয়ে কাজ করবে বলে ঠিক করল!কি বুঝতে পারছেন না কে এরা???এরা ক্ষ্যাপার দল,লালন সাইয়ের গানকে নতুন করে তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছান ব্যান্ডদল ‘লালন’!
ব্যান্ডটি গঠিত হয় -----ঢাকা,বাংলাদেশ
ব্যান্ডের ধরন ----------ফোক রক,ফিউশন
ব্যান্ডের কার্যকাল -----২০০১-বর্তমান
অনুপ্রেরণা ---------------সোলস
লেবেল -----------------জি-সিরিজ,সাউন্ড মেশিন
২০০১ সালে তিতি মং,সুমি ও অন্যান্যদের নিয়ে গড়ে উঠে ব্যান্ডদল লালন।লালনের ভোকাল সুমি শাস্ত্রীয় সংগীতের শিক্ষা নেন আলি আহমেদ আর নাসির হায়দারের কাছে।অসীম দেবনাথ তাকে লালন সাঁই সম্পর্কে উৎসাহী করে তোলেন।সুমি বলেন,”অসীম স্যারের কাছে সাঁইজির গানের বেশি সংগ্রহ ছিল না বলে আমি গিয়েছি সুফি মণ্ডলের কাছে।তার কাছে তালিম নিয়েছি লালন গীতি।“তাদের সকলের চিন্তাধারা ছিল তারা বাউল গানকে নতুনভাবে দেশের মানুষের মাঝে পরিচিত করতে পারবে।
রকের সাথে ফোকের মিশ্রণে তারা এসব আধ্যাত্মিক গানকে নতুন করে সৃষ্টি করতে চেয়েছে এবং এ থেকেই প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ডদল লালন।দেশের তখনকার পরিস্থিতি তে সুমির ভোকাল হিসেবে একটি ব্যান্ডদলের ফ্রন্টলেডি হওয়াও অনেক সাহসী একটি পদক্ষেপ!নারী কণ্ঠে বাউল গানগুলো পেয়েছে এক ঐশ্বরিক পূর্ণতা,ছুঁয়েছে আমজনতার হৃদয়।
২০০১ সালে ব্যান্ডের পথচলা শুরুর পর ২০০৭ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাদের ফার্স্ট স্টুডিও অ্যালবাম বিপ্রতীপ।মানুষের মাঝে গানগুলোর জনপ্রিয়তা ও লালনের প্রতি সকলের ভালোবাসা থেকে লালন মাত্র দুই বছর পরেই লঞ্চ করে তাদের সেকেন্ড স্টুডিও অ্যালবাম ‘ক্ষ্যাপা’।এ্যালবামটি শ্রোতাসমাজে ব্যাপক সফলতার মুখ দেখে।ক্ষ্যাপার মাধ্যমেই মূলত লালন দেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে একটি ইমেজ ক্রিয়েট করে।
এর তিন বছর পড়ে ২০১২ সালে লালন তাদের তৃতীয় অ্যালবাম ‘পাগল’ রিলিজ করে।লালনের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষ্যাপা,জাত গেল জাত গেল,পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না,আমি গান গাইতে পারিনা ইত্যাদি।বর্তমানে লালন তাদের ৪র্থ অ্যালবাম ‘সাদা কালো’ রিলিজের অপেক্ষায় আছে এবং পঞ্চম অ্যালবাম Hippy Revolution’ এর কম্পোজিং এর কাজ শুরু করেছে।
লালন ব্যান্ডের বর্তমান লাইনআপ
সেন্টু(বেজ গিটার)
মাসুম(লিড গিটার)
তিতি(ড্রামস & পারকিউশন্স)
সুমি(ভোকাল)
লিমন
দেশের আনাচে-কানাচে কন্সার্ট করার পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ের অনেকগুলো কনসার্টে পারফর্ম করেছে ব্যান্ডদল লালন।কনসার্টে তাদের উপস্থিতি ও গানের মাধ্যমে জনগণের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে লালন।দেশে কনসার্ট করার পাশাপাশি বিদেশেও কনসার্টে অংসগ্রহন করেছে লালন।বর্ষবরণ ১৪২৩ এ ‘ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি ১৪২৩ বর্ষবরণ উৎসব’ এ ওয়াশিংটন মাতিয়ে আসে লালন। তাদের উপস্থিতি প্রবাসী বাঙ্গালীদের মাঝে ব্যাপক সারা ফেলে।
এছাড়াও ২০১৫ সালে জাতিসংঘ আয়োজিত এক কনসার্টে সংগীত পরিবেশনা করে লালন।সেখানে তারা ‘জাত গেল জাত গেল বলে’,’গুরুর চরণ’ ও ‘পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না’ গান তিনটি পরিবেশনা করে।
লালন ব্যান্ডের প্রাক্তন সদস্যবৃন্দ
আশিক
জুয়েল
কামাল
মাসুম
রাসেল
লালনের ভোকাল সুমি মনে করেন লালনের হয়ে তাদের এ যাত্রা পূর্বেও যেমন শুভ ছিল,আগামিতেও টা দর্শকপ্রিয়তা পাবে।তাদের তিনটি অ্যালবাম এবং ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পাওয়ার পর তারা এটা বুঝতে পারছেন যে লালন বাংলাদেশে ঠিক সেই ভূমিকাই পালন করছেন যার মাধ্যমে মরমি কবি লালন সাঁই এবং অন্য সব বাউলদের গান সবার মাঝে পৌঁছে যায়।এর মাধ্যমে তারা শত বছর আগের লালন সাইয়ের কথাগুলকেও সকলের মাঝে তুলে ধরতে পারছেন।
লালন ব্যান্ডের প্রকাশিত অ্যালবাম সমূহ
বিপ্রতীপ(২০০৭)
ক্ষ্যাপা(২০০৯)
পাগল(২০১২)
লালন ব্যান্ডের জনপ্রিয় গানগুলোর তালিকা দেয়া হলো
১. খেপা
২. আল্লাহ বল
৩.আমি গান গাইতে পারি না
৪. ছাতক
৫. সময় গেলে
৬. গুরুর চরণ
৭. কৃষ্ণ প্রেম
৮. এ কেমন দিন
৯. ওপর হয়ে
১০. তাল তোমার
১১. জাত গেলো
১২. ছাতক
১৩. বসন্ত বাতাস
১৪. সুধা সিন্ধু
১৫. সুধা সিন্ধু
১৬. তাল তমাল
১৭. জাত গেলো
১৮. সুধা সিন্ধু
১৯. জাত গেলো
২০.কৃষ্ণ প্রেম
২১. বলি মা তোর
২২. ভরা চাঁদ
২৩. দু'কূল
২৪. দু কূল
২৫. অন্তরা
২৬. পাগল
২৭. হেলায় হেলায়
২৮. ওপের হয়ে
২৯. গুরুর চরণ
৩০. ঘোর ভাঙল
৩১. দু'কূল
৩২. ওপের হয়ে
৩৩. যায় কেমন দিন
৩৪. ঘোর ভাঙল
৩৫. পাগল
৩৬. বসন্ত বাতাস
৩৭. ধর চর
৩৮. অন্তরা
৩৯. বিপ্রতীপ
৪০. বলি মা তোর
Post credit :আল হাসিব রিজন
Comments
Post a Comment