অসুস্থ না হলে ওদের আসল চেহারাটা দেখতে পেতাম না: শিরোনামহীনের অন্য সদস্যদের বললেন তানযীর তুহিন।
শিরোনামহীন ছাড়া যেমন তানযীর তুহিন এর কথা চিন্তা করা যায় না, ঠিক তেমনি তানযীর তুহিনকে ছাড়া শিরোনামহীন এর কথা ভাবা ও যায় না। শিরোনামহীন আর তুহিন- একে অন্যের পরিপূরক বললে তেমন কিছু ভুল বলা হবে না।যখন শিরোনামহীন এর নাম আসে তখন মনের অজান্তেই চলে আসে তানযীর তুহিন এর কথা। আবার তানযীর তুহিন এর নাম উচ্চারিত হওয়ার সাথেই চলে আসে শিরোনামহীনের নাম। এটা ভাবতে হয় না চলে আসে মনের অজান্তেই। তবে হয়তো তেমনটা আর হয়তো হবে না। কারণ আজ তারাই তো থাকছে না এক সাথে। কি অবাক হচ্ছেন ,না অবাক হবেন না এইটাই সত্য এবং এইটাই বাস্তবে রূপ নিবে কিছু দিন এর মধ্যে। যা এখনই বুঝা যাচ্ছে পরিষ্কার ভাবে ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শিরোনামহীনের ভোকাল তানযীর তুহিন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টের মাধ্যমে জানান,তিনি শিরোনামহীন ব্যান্ড এ আর থাকছেন না। তানযীর তুহিন লেখেন,
“আমি তানযীর তুহিন, ব্যক্তিগত কারণে শিরোনামহীন ব্যান্ড থেকে সরে যাচ্ছি, কিন্তু গান ছাড়ছি না।”
এই কথার প্রসঙ্গে শিরোনামহীনের জিয়াউর রহমান জিয়া (বেজ গিটারিস্ট ) বলেছিলেন,তানযীর তুহিন “বেশ কিছুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। তানযীর তুহিন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও আপাতত চিকিৎসকরা তাকে মঞ্চে পারফর্ম না করার পরামর্শ দিয়েছেন।আর সে এই শারীরিক ঝুঁকি এড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছে জানান। আর তাই আমারা সবাই আমাদের বন্ধুর ভালোর জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
**** তবুও তানযীর তুহিন ফোন ধরেননি ,সান্ত্বনা মেলেনি জিয়াউর রহমান জিয়ার কথাতেও
জিয়াউর রহমান জিয়া আরও বলেছিলেন,দেখুন, আমাদের ব্যান্ডের মধ্যে কোনও ভাঙন ধরেনি। আমরা আগের মতোই এক সাথে আছি। আমরা সবাই মিলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি
তুহিনের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে। এই ব্যাপারটা আমাদের ব্যান্ডের এবং তুহিনের ভক্তরা তার ভালোর জন্য ব্যাপারটি খুব ভালোভাবে নেবে বলে আশা করছি।”
তানযীর তুহিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় শনিবার বিকেলে।তানযীর তুহিনের দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জিয়ার কোনো কথার মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তানযীর তুহিন বলেন, “বন্ধুত্ব না, ওদের কাছে টাকাটাই মুখ্য।
অথচ আমাদের ধারণা ছিল ব্যান্ড মানে বন্ধুত্ব।আর যারা ব্যান্ড মানে বন্ধুত্ব এটা বোঝে না তাদের সঙ্গে থাকার চেয়ে না থাকাটাই বেশি সঙ্গত বলে আমি মনে করছি।”
তানযীর তুহিন আরো জানান,গত ২১ সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন তিনি। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি ছিলেন তিনি। তার হার্টের রক্তনালিতে ক্ষুদ্র একটা ব্লক পাওয়া গেছে। যার কারণে অস্ত্রোপচার লাগেনি। চিকিৎসকরা বলেছেন, ওষুধ খেলেই ঠিক হয়ে যাবে ব্লকটা।
তানযীর তুহিন হাসপাতালে ছিলেন চার দিন।তবে চিকিৎসকেরা আমাকে বলেছিলেন, এক মাস গান থেকে দূরে থাকতে হবে । কিন্তু আমার ব্যান্ড মেম্বার এই বিষয় টা সাধারণ ভাবে নিতে পারে নি। তারা এক মাসে তিন চারটা শো থেকে যে পরিমান টাকা আসবে তার মায়া ছাড়তে পারছিলো না কোনো ভাবেই ।
তানযীর তুহিন আরো বলেন আমি নিজের অসুস্থতাকে ধন্যবাদ জানাই।এটা ভাবতেই আমার লজ্জা লাগছে যে এই মানুষগুলো আমার পরিবারের সদস্য ছিল। আমরা একসঙ্গে এতদিন অনেক কাজ করেছি। তাদের এই রূপ চেহারাটা আমি অসুস্থ না হলে কখনো দেখতে পেতাম না।আমার ব্যান্ডের সদস্যরা আমার বাসায় ২ অক্টোবর এসেছিলেন।তাদের দেখে আমি ভেবেছিলাম ওরা আমাকে দেখতে এসেছে। কিন্তু একটু পর তাদের সাথে কথা বলে আমি তাদের উদ্দেশ্য কি তা বুঝতে পারি। তারা লাভ ক্ষতির হিসেব করতে এসেছেন একটা অসুস্থ মানুষের সঙ্গে ,যেটা আমার কাছে খুবই বেদনাদায়ক বলে মনে হয়েছে। এমনটা আমি কখনো কল্পনা ও করিনি তারা এমন কিছু করতে পারবে আমার সাথে।
তানযীর তুহিনকে নতুন ব্যান্ড গঠন প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন ,আগে সুস্থ হই, তারপর চিন্তা করা যাবে এটা নিয়ে।’আপাতত তেমন কিছু ভাবছি না।
তানযীর তুহিন শিরোনামহীনের বেশিরভাগ গান নিজের দাবি করেন ,তিনি বলেন আমার গান অন্য কেউ করুক,আমি এইটা কখনো চাই না। আমার করা গান গুলো আমিই করতে চাই। গানগুলোর সম্পূর্ণ স্বত্ব আমার। এই গান গুলো অন্য কেউ করতে পারে না।
শিরোনামহীনের গান নিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করছে, এসব বিষয় গুলো নিয়ে কাজ করছে, আমি সবার কাছে আইনি নোটিশ পাঠাব। তাদের সাহায্য চাইবো। তাদের সঙ্গে কথা বলব। সবাই আমাকে সহযোগিতা করবে বলে আমি আশা করছি,।”
সার্বিক বিষয়ে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলেও জানান তানযীর তুহিন।
Comments
Post a Comment