ব্ল্যাক ব্যান্ডের ইতিহাস জানতে অবশ্যই পড়ুন।

ব্যান্ডের নাম : ব্ল্যাক ( BLACK ) 

ব্যান্ড সদস্য : (আমি ২০০২ সালে রিলিজ হওয়া তাদের debut এ্যালবাম ''আমার পৃথিবী '' সময়কার সদস্যদের নাম দিয়েছি 
ভোকাল : জন কবির ভাই
ড্রামস : টনি ভাই
বেজ: মিরাজ ভাই
লিড গীটার : জাহান ভাই
কিবোর্ড এবং ভোকাল : তাহসান ভাই 
২০০১ সাল ! ''এল আর বি , আর্ক , নগর বাউল '' ''THE BIG THREE OF ROCK '' সারাদেশ কাপাচ্ছে ! :D রক গান মানেই তাদের গান ! কিন্তু হঠাৎ করে , নাম না জানা এক ব্যান্ডের অচেনা এক গায়কের একটা গান শুনে, বাংলাদেশে যতো রক গান পাগল মানুষ আছে , তারা সবাই একসাথে বলে উঠলো ''পারফেক্ট '' :3 !!!! ( ছাড়পত্রে এলবামে তাদের প্রথম গান প্রকাশ হয় )


সেই গায়কের কণ্ঠ মানুষ মুগ্ধ হয়ে শুনল , এতো সুন্দর !! এতো আলাদা !!এতো অন্যরকম !! সেই গানটির নাম ''চেনা দুঃখ'' ! সেই অচেনা ব্যান্ডের নাম "ব্ল্যাক" ! অচেনা , আলাদা , অন্যরকম বেশি সুন্দর কণ্ঠের অধিকারী গায়কটির নাম "জন"  তাঁর কণ্ঠের মতো তিনি মানুষ হিসাবেও অনেক unique পারসোনালিটির মানুষ !

গানের নাম :চেনা দুঃখ

"তবুও অপেক্ষায় থেকো রাত জেগে
আমি ফিরতেও পারি কথার টানে
তোমার অজস্র শব্দের মুঠোয়
জীবন আমারনিয়ত ক্ষয়ের পাশে,
কেন যে বাচতে চাই?
তবুও তোমার গান বুঝিনি আমি
বুঝেছি শুধু তোমার কাছে যাবার পথ নেই" 
শুরু তাদের পথচলা !!!!!!! 

১৯৯৮ সাল ! জন ভাই , টনি ভাই আর জাহান ভাই ছোট বেলার বন্ধু ! তিনজনই খুব গান পাগল ! দিনের বেশিরভাগ সময় একে অন্যের বাসায় গান শুনে কাটায় !Pearl Jam, Stone Temple Pilots , Soundgarden তাদের প্রিয় ব্যান্ড ! একদিন তিন বন্ধু মিলে ভাবল , একটা ব্যান্ড বানালে কেমন হয় ! তিনজন মিলে খুলে ফেললো একটা ব্যান্ড !
নাম দিলো ,'' Dope Smuglazz ''

( জি !!এইটা ব্ল্যাক এর আগের নাম :v ) ! তারপরে তাদের আরেকজন বন্ধু এবং পরবর্তীতে ব্যান্ড মেম্বার আসিফ ইকবাল ভাই তাদের কে বলেন , নাম ''ব্ল্যাক '' রাখতে !! ( থাঙ্কু ভাই :3  Dope Smuglazz নামটা বদলানোর জন্য :3 )
আমাদের দেশের প্রায় সব ব্যান্ড এর মতো ব্ল্যাক এর শুরুও খুব বেশি কষ্টের ছিল ! ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার না হয়ে গান গাওয়াতে আম্মা আব্বার ঝাড়ুর বারি খেতে হইছে ! জন ভাইয়া নিজে বলছেন , '' পরিবারের যন্ত্রণার কারনে , বাংলাদেশে ব্যান্ড মিউজিক করা হল একধরনের পাপ করার মতো ''


আমি মনে করি ব্ল্যাক এর সবচেয়ে ভালো ডিক হল , তাঁর orginality ! স্রোতের বিপরীতে গান গাওয়া !! জন ভাইয়ার মতো করে গান গাওয়া প্রায় অসম্ভব !আমি নিজেও পারি নাই , আজো কাউকে পুরাপুরি জন ভাইয়ার ভয়েস নকল করে গান গেতেও দেখি নাই ! তাদের প্রথম debut অ্যালবাম ছিল , ''আমার পৃথিবী '' গান করার বেপারে , রকগুরু আজম খান তাদের অনেক ইন্সপায়ার করেছেন :)  অভিমান , পার্থনাদ , এখনো , মানুষ , মিথ্যা অন্ধকারের পাশে , গান তখন সবার মুখে মুখে !  ভার্সিটির আড্ডাতে , ক্যান্টিনে , পার্কার পাশে সব জায়গায় তখন সবার মুখে মুখে খালি ব্ল্যাক এর গান !  বিশেষ করে অভিমান গানটা ,
গানের নামঃঅভিমান  

স্বগত লগ্নে জমাট স্তব্ধতা
ঘুম পেলে ক্ষতি কি?
তোমার চোখে গভীর বিশ্বাস
হারালে ক্ষতি কি?
কেবলই অভিমানের রাত
তবে কেন প্রতীক্ষা?
ক্ষয়া চোখে ভুলের বিন্যাস
নিভু স্বপ্নবাতিটা
আমাকে তুমি জাগিয়েএকা কেন ঘুমালে?
আমাকে এড়িয়ে তোমার আকাশে
কবে ফুল ঝরেছে বলো? 

তাদের দ্বিতীয় এ্যালবাম ছিল , ''উৎসবের পরে '' ! অ্যালবামটিকে বাংলাদেশের রক জগতের অতি মূল্যবান সম্পদ হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে ! ! ''ইচ্ছা '' , ''পরাহত '' '''মিছিমিছি '' ''প্রাকিতিক ':) খুব অসাধারন কিছু গানে আছে এই এলবামে  এই সময়ে , আপনারা কি ''Off Beat '' নাটক টা দেখেছেন ? নাটকে ব্ল্যাক এর সব ব্যান্ড মেম্বাররা আছে ! খুবই ভালো নাটক ! প্রেম ভালোবাসা সবই আছে , খালি লুতুপুতু নাই ! আপনাদের ভালো লাগবে , দেইখেন ! ''তুমি কি সারা দিবে '' ! 
এক অ্যাড ছিল , গ্রামীণ ফোন dejuice এর  এই গানটা অনেকটা রুপকথার হেমিলিয়নের বাঁশির মতো ! আপনি সারা দিতে ইচ্ছা না থাকলেও আপনি সারা দিতে বাধ্য !!!
বোহেমিয়ান বাতাসে চলো হেটে যাই
একই সাথে একই সুরে আমরা সবাই
লক্ষ্য হারিওনা স্বপ্ন ছেড়ো না
ডাকছে জীবন তুমি বসে থেকো নাতুমি কি সাড়া দেবে? 

২০০৫ সাল , ২০ এপ্রিল  চিটাগং থেকে একটি শো করে আসার সময় তাদের গাড়ির এক্সিডেন্ট হয় ! ব্যান্ডের সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ইমরান আহাম্মেদ চৌধুরীর তৎক্ষণাৎ মৃত্যু হয় ! জন ভাইয়া , জাহান ভাইয়া ,তাহসান ভাইয়া আহত হন ! টনি ভাই আর মিরাজ ভাইয়া খুব বেশি injuried হওয়াতে তাদেরকে hospitalized করার লাগে ! আমি বুঝলাম না প্রায় সব ব্যান্ড এর এতো বেথাভরা ইতিহাস কেন ? আর্টসেল এর রুপক ভাইয়ার মৃত্যু , অর্থহীনের সুমন ভাইয়ার ক্যান্সার ! যাদের গান আমরা দুঃখ কমানোর ওষুধ হিসাবে খাই , তাদের নিজেদের লাইফটাই অজস্র দুঃখে ভরা!GIVE ME A BAND AND I WILL WRITE YOU A TRAJEDY ! 
এই এক্সিডেন্ট এর পরে , black ব্যান্ডের অনেক সমস্যা শুরু হয় ! মিরাজ ভাইয়ার পাঁটেলা( আমাদের হাঁটুর জয়েন এর হাড্ডির নাম ) পুরাপুরি ডামেইজড হয় ! মিরাজ ভাইকে ব্যান্ড ছাড়তে হয় ! অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য black আর গান করবে না জানানো হয় ! এতোসব সমস্যার মধ্যে ২০০৬ সালে তাহসান ভাই ব্যান্ড ছেড়ে চলে যান !
কিন্তু এইখানেই গল্প শেষ না ! আবার আছে !  

৬ বছর পরে ''black '' ফিরে আসে , তাদের এ্যালবাম ''আবার '' নিয়ে ! এই এ্যালবামটা রিলিজ পাওয়ার পরে ৩ ঘণ্টায় ৫০০০ কপি বিক্রি হয় !  এই এ্যালবাম নিয়ে একটা কাহিনি শেয়ার করলেই বুঝবেন এইটা কতো ব্যাপক একটা এ্যালবাম ,
একদা একজন ''black '' ব্যান্ডের ফ্যানকে জিজ্ঞেস করা হয় , '' আবার এ্যালবামের কোন গানটা সবচেয়ে ভালো ??? ''
উত্তর ঃ সরি ! আমি জানি না ! আবার , আবার , এতবার শুনলাম তাও জানতে পারলাম না , আপনি জানলে আমাকে জানায়েন 
এই এ্যালবামের সব গান এত্ত ভালো ! পুরাই মাথনষ্ট এ্যালবাম একটা ! , কেন , করুন , আবার , মানুষ পাখির গান , অবশ , এই গান ,সবগুলা গান ভালো !
যারা black এর ফ্যান তারা আমার কথা বুঝবেন , আর যারা ব্যান্ড মিউজিকে নতুন, এখনো শুনেন নাই ''black '' এর গান তাদেরকে বলবো , ''চেনা দুঃখ '' , ''তুমি কি সারাদিবে '' ''পরাহত '' এই গানগুলি দিয়ে black এর গান শুনা শুরু করতে পারেন !  এই কয়টা শুনেন , বাকিগুলা নিজে খুজে শুনবেন !


POST CREDIT : Illin Bintey Soyeb

Comments

Popular posts from this blog

শাবনূরের লাইফস্টাইল অজানা অনেক তথ্য I আসল নাম | উচ্চতা I ওজন I শারীরিক পরিমাপ | বয়স | পড়ালেখা | স্বামী | ক্যারিয়ারের অর্জন | বাড়ি | জীবনী এবং উল্লেখযোগ্য সিনেমায় ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্ককে জানতে অবশ্যই পড়ুন

বাংলাদেশী ব্যান্ডের আন্ডাররেটেড গান সমূহের তালিকা দেয়া হলো । নতুন কিছু গানের স্বাদ পেতে অবশ্যই পড়ুন।

পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ২০ টি বস্তু, যা এতটাই দামী আপনি শুনে অবাক না হয়ে পারবেন না,জানতে অবশ্যই পড়ুন।