ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা ,ময়দান যখন এক যুদ্ধক্ষেত্র

ফুটবলের সবচেয়ে উত্তেজনাপূ্র্ণ মহল সৃষ্টিকারী রাইভাল ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা।

পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাস নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।
অগণিত লেজেন্ড এবং সুন্দর ফুটবলের মহিমায় ব্রাজিল ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সফলতম দল।
অন্যদিকে আর্জেন্টিনার ইতিহাস বিভিন্ন চুরী-চাকারীতে ভরপুর এক কালিমাখাময় ইতিহাস।
আর্জেন্টিনাকে ব্রাজিলের রাইভাল বলা নিছক বোকামী ছাড়া আর কিছুই না। কারণ অর্জনের দিক দিয়ে আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের ধারে কাছেও নেই।
তবুও ল্যাটিন আমেরিকার এই দুটি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক টানাপোড়ন এবং প্রতিবেশী দেশ হিসেবে সমর্থকদের উত্তেজনা থেকেই লোকমুখে আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের রাইভাল হওয়ার তকমা পেয়ে গেছে।
কিন্তু বাস্তবতা হল আর্জেন্টিনাকে যে ব্রাজিলের সাথে তুলনা করা হয়, তারা সেটির যোগ্যতাও রাখেনা।
কিন্তু কিছু মানুষের ভুল ভ্রান্তি এবং নিজেদের অযথা বড়াই ভাঙানোর জন্যই এই বিষয় নিয়ে লেখা।

ধাপে ধাপে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার তুলনামূলক আলোচনা তুলে ধরলাম।
যাদের মাথার মগজ আছে তারাই কষ্ট করে পড়বেন এবং বুঝতে পারবেন ব্রাজিল কেন আর্জেন্টিনার থেকে যোজন যোজন এগিয়ে।

ফিফা বিশ্বকাপে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা
ব্রাজিল ⇛ গ্রেটেষ্ট স্যো অন আর্থ নামে খ্যাত বিশ্বকাপের গ্রেটেষ্ট দল ব্রাজিল।
ব্রাজিল সর্বোচ্চ ৫ বার বিশ্বকাপ জয় করেছে। সালগুলো যথাক্রমে ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪, ২০০২
এরমধ্যে ১৯৭০ এর ব্রাজিলের দলটিকে সর্বকালের সেরা জাতীয় ফুটবল দল হিসেবে গণ্য করা হয়।
এছাড়া ব্রাজিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১বার সেমিফাইনাল কিংবা শেষ চারে উঠতে সক্ষম হয়েছে।
একমাত্র দল হিসেবে ২০ টি আসরই ব্রাজিল খেলেছে।
ফিফার অলটাইম রেংকিং এ ব্রাজিলের পয়েন্ট সবচেয়ে বেশী।
বিশ্বকাপে ২য় সর্বোচ্চ ৯৮ ম্যাচ খেলে ২২১ টি গোল করেছে ব্রাজিল।
সবচেয়ে বেশী ৭০ টি ম্যাচে জয় পাওয়ার রেকর্ড ব্রাজিলের।
বিশ্বকাপের হেড টু হেডে ব্রাজিলের অবস্থান সবচেয়ে ভালো।
১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে বিশ্বকাপ জিতে ব্রাজিল টানা দুবার বিশ্বকাপ জিতার কীর্তি পায় যা শুধু ইতালীরই রয়েছে।
১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে ব্রাজিলের ৫-০ গোলের জয়টি ছিলো বিশ্বকাপের কোন আসরের ফাইনালে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় এবং সবচেয়ে বেশী গোলের জয়।
ব্রাজিল ১৯৯৪ বিশ্বকাপে এক আসরে সবচেয়ে কম ১১ টি গোল করেও বিশ্বকাপটি জিতেছিলো।
জার্মানীর পর টানা তিন আসরে (১৯৯৪ হতে ২০০২) ব্রাজিল ফাইনালে উঠেছে।
২০০২ বিশ্বকাপে ব্রাজিল অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় এবং সেবার এক আসরে সর্বোচ্চ সাতটি অর্থাৎ সবকটি ম্যাচ জেতার গৌবর অর্জন করে যা আর কোন দলেরই নেই।
বিশ্বকাপের এক আসরের প্রতিটি ম্যাচে (১৯৭০ সালে ৬ ম্যাচে ৭ টি) গোল এবং টানা ৬ ম্যাচে গোল করেছে জেয়ারজিনহো।
বিশ্বকাপের ২য় সর্বোচ্চ (১৫ টি) গোলদাতা রোনালদো ফেনোমেনন।
খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে সবচেয়ে বেশী বিশ্বকাপ (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০) জিতেছে ব্রাজিলের মারিও জাগালো।
বিশ্বকাপের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল করা, হ্যাট্রিক করা এবং বিশ্বকাপ জিতেছে ফুটবল কিং পেলে।
সর্বোচ্চ চারটি বিশ্বকাপে গোল করা (১৯৫৮-১৯৭০) এবং রেকর্ড তিনবার বিশ্বকাপ জয়ের মালিকও ফুটবল সম্রাট পেলে।
ব্রাজিলের এমন আরও ঈর্ষণীয় রেকর্ড আছে যা বলে পোষ্টটা আরও বড় নাই বা করলাম।

আর্জেন্টিনা ⇛ এবার আসা যাক নিজেদের সেরা দাবি করা আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ ইতিহাস নিয়ে:
আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতেছে দুবার, প্রথমটি ১৯৭৮ সালে এবং দ্বিতীয়টি ১৯৮৬ সালে।
উভয় বিশ্বকাপই তারা জিতেছে নিজেদের চুরী চাকারীর মহিমায়।
আর্জেন্টিনা নিজেদের জাত স্পষ্টভাবে চিনাতে সক্ষম হয় ১৯৭৮ বিশ্বকাপে যেটি ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ বিতর্তিক বিশ্বকাপ হিসেবে কুখ্যাত।
তারা স্বাগতিক হয়ে আসরটিতে সর্বোচ্চ ফায়দা উঠিয়েছিলো।
প্রথমে ব্রাজিলকে টুর্নামেন্ট অর্গানাইজাররা গ্রুপ স্টেজের সব ম্যাচ 'মার দেল প্লাতা' স্টেডিয়ামে খেলতে বাধ্য করেছিলো যেটির পিচ ছিলো খুবই খারাপ এবং খেলার অযোগ্য বলে সমালোচিত হয়েছিলো।
গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার ম্যাচগুলার সময় নির্ধারণ হয় রাতে অন্যান্য ম্যাচগুলার পর। অন্য ভাষায়, নিজেদের ম্যাচের আগেই আর্জেন্টাইনরা জেনে যেত নিজেদের অবস্থান এবং প্রতিপক্ষকে পরাস্থ করার পন্থা সম্পর্কে।
পরবর্তী বিশ্বকাপ থেকে এই নিয়ম বাতিল করা হয়।
আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচে হাঙ্গেরীর সাথে প্রচন্ড ফিজিকাল খেলার পরও রেফারী নির্বাক দর্শক ছিলো, উল্টো হাঙ্গেরীর দুই খেলোয়াড়কেই লাল কার্ড দেখিয়েছিলো। আর ইতালীর বিপক্ষেও আর্জেন্টিনা বিতর্কিত প্যানাল্টি থেকে গোল পেয়ে জয় নিশ্চিত করে।
এছাড়া ব্রাজিল-সুইডেনের ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচটির শেষ মুহূর্তে জিকো হেডের মাধ্যমে গোল করে।
কিন্তু রেফারী গোলটি বাতিল করে দেয় এই বলে যে, বল জালে যাবার পূর্বেই রেফারী ম্যাচ সমাপ্তির বাশি বাজিয়ে দেয় যা পরে তীব্র সমালোচিত হয়েছিলো।
এভাবে গ্রুপ পর্ব পার করেই ক্ষান্ত হয়নি আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয়লাভ করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হওয়া ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়।
তৃতীয় ম্যাচে ব্রাজিল পোল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারায়।
আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের ম্যাচের ফলাফল জানার জন্য দেরী করে ম্যাচ শুরু করে।
তখন আর্জেন্টিনার সামনে পরিসংখ্যান দাড়ায় ফাইনালে উঠার জন্য পেরুকে ৪ গোলের ব্যবধানে হারাতে হবে।
প্রথমার্ধে পেরুর বিপক্ষে আর্জেন্টিনা ২-০ গোলের লিড নেয়।
দ্বিতীয়ার্ধে দশ মিনিটের মাথায় পেরু তাদের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ভেলাসকুয়েজকে উঠিয়ে নেয়।
এরপর আর্জেন্টিনা আশ্চর্যজনকভাবে আরও চার গোল করে পেরুকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয় এবং এতে একটিও ম্যাচ না হেরেও ব্রাজিলের বিশ্বকাপ থেকে ছিটকানো, আর অন্যদিকে আর্জেন্টিনার ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত হয়।
ফাইনালেও নেদারল্যান্ডের কৌশলপত্র চুরি করার মাধ্যমে ৩-১ গোলে জয়লাভ করে আর্জেন্টিনা নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ পায়।
ম্যাচের পর রাগে নেদারল্যান্ড পোষ্ট ম্যাচেও অংশগ্রহণ করেনি।
পরবর্তীতে পেরু আর আর্জেন্টিনার ম্যাচটি নিয়ে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য বের হয়।
সে ম্যাচে পেরুর গোলকিপার রোমান কুইরোজা ছিল জন্মসূত্রে আর্জেন্টাইন যে টুর্নামেন্টজুড়ে ভালো খেলেও ম্যাচটিতে নিমিষেই ৬ গোল খেয়েছিলো।
ম্যাচের আগে পেরুর ড্রেসিংরুমে আর্জেন্টিনার এক ব্যবস্থাপক যায়। শুভকামনা জানাতে নাকি অন্য কিছু করতে সেটা ভালোই বুঝা যায়।
আর্জেন্টিনার সামরিক শাসকরাও চাচ্ছিলো আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতুক যাতে বিশ্বজুড়ে আর্জেন্টিনার খারাপ ইমেজ ঠিক হয়।
পেরুভিয়ান সেনাটর লেদেসমাও আদালতে স্বীকার করেছে তারা আর্জেন্টিনার সাথে চুক্তি করেছিলো যে, পেরু যদি ম্যাচ হারে তবে আর্জেন্টিনার সামরিক জান্তা পেরুর ১৩ জন রাজনৈতিক কয়েদীকে মুক্তি দেয়া সহ আরও সুবিধা দেবে।
চুক্তিমত সেসব হয়েছিলোও।
সেই বিশ্বকাপ জেতা আর্জেন্টিনার স্টাইকার লিওপোল্ডো নিজেই বলেছে, "আমি যা জানি ৭৮ এর বিশ্বকাপ নিয়ে, তাতে আমি কখনোই বলতে পারবো না যে জয়টি আমার গর্ববোধ করার মত কোন বিষয়।"
এভাবেই নিজ দেশে বিশ্বকাপের আসর পেয়ে ফিক্সিং, জোচ্চুরী, বাটপারী করে আর্জেন্টিনা নিজেদের ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা ছিনিয়ে নেয়।

★★১৯৮৬ সাল, যে আসরে আর্জেন্টিনা ২য় বিশ্বকাপ শিরোপা পায়, সেটিতেও তাদের রক্তে মিশে থাকা চুরীর মনোভাব দূরে থাকবে এমন তো হতেই পারেনা।
বিশ্বকাপটির কোয়ার্টার ফাইনালে সেটিরই প্রমাণ মেলে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের ৫১' মিনিটে আর্জেন্টাইন প্লেমেকার ম্যারাডোনা হাত দিয়ে গোল করে। গোলটি করে নির্লজ্জের মত নিজের হাতকে ঈশ্বরের হাত হিসেবে অভিহিত করে এবং গোলটিকে বানিয়ে দেয় "হ্যান্ড অফ গড"।
ঈশ্বর কি এতোটাই তুচ্ছ যে চুরি করার সাথে তার তুলনা করা হবে।
অবশ্য যার ক্যারিয়ার জুড়ে হাজারো খারাপ কাজের নজির মিলবে তার থেকে কিই বা আশা করা যায়।
সেম্যাচের দায়িত্বরত রেফারী বেনাসিউর নিজ মুখেই শিকার করেছেন, তিনি ঠিকই ম্যারাডোনার কু-কীর্তিটি দেখেছিলেন এবং গোলটিকে স্বীকৃতি দিতে সহযোগীতা করেছিলেন।
বাহ! এমন কর্মকান্ড দেখলে মনে হয় চোর চুরী করে গর্ববোধ করে সেটার ঢোল পিটাচ্ছে যেন সে কোন মহৎ কাজ করে ফেলেছে।
গোলটির মিনিট চারেক বাদেই ম্যারাডোনা বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোল করেন।
কিন্তু তাতে কি? এতে চুরী তো আর কোন ভালো জিনিসে রূপান্তরিত হয় না।
হাত দিয়ে করা গোলটি গ্রহণ যোগ্যতা না পেলে ইতিহাসের অনেকখানি পরিবর্তনই হতে পারতো।
ম্যাচটি আর্জেন্টিনা ঠিকই ২-১ গোলে বাজিমাত করে নেয়।
আর সফলভাবেই দ্বিতীয় বারের মত কূটনৈতিক পন্থা অবলম্বন করে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের স্বাদ পায়।

পরবর্তী আসর অর্থাৎ, ১৯৯০ বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনা চুরী করে বিশ্বকাপে জিতার অভিযানে নামে।
১৯৭৮ এর মত এবারও বলির পাঠা হয় ব্রাজিল।
রাউন্ড অফ ১৬ তে গত আসরের শিরোপাধারীরা ব্রাজিলের মুখোমুখি হয়।
ম্যাচটি ব্রাজিলের নিয়ন্ত্রণেই ছিলো যতক্ষণ পর্যন্ত আর্জেন্টিনা নিজেদের আসল রূপে আসেনি। আসল রূপ বলতে সেই খারাপ পন্থা অবলম্বন করা।
আর্জেন্টিনার ফিজিওশিয়ান লরেঞ্জোর দেয়া ওয়াটার বোতল থেকে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ব্রাঙ্কোর পানি খাওয়ার পর থেকেই সে অসুস্থ অনুভূত করে এবং স্বাভাবিক খেলা দিতে পারেনা।
আর আর্জেন্টিনা ব্রাঙ্কোর পজিশনের দিক থেকেই একমাত্র জয় নির্ধারণী গোল করে।
আর্জেন্টিনার সেসময়কার কোচ বিলার্ডোকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমি জানিনা। তবে এও বলছিলা এমনটি হয়নি।"
ব্রাজিলের লেজেন্ড বেবেতোর কাছে আর্জেন্টিনার সেই ফিজিও স্বীকার করে সেদিনের পানিতে চেতনা নাশক ঔষধ ট্রাঙ্কুলাইজার মিশানো ছিলো এবং এর আগেও অনেককের সাথেই এমন করা হয়েছিলো।
এমনকি ম্যারাডোনাও এক ইন্টারভিউতে কথাটির সাথে একমত পোষণ করে।

এরূপভাবে ফুটবল অঙ্গনের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টে ব্রাজিল যেমন বড় বড় অর্জন করেছে ও রেকর্ড বানিয়েছে, তেমনিভাবে আর্জেন্টিনা বড় বড় প্রতারণার পাহাড় গড়েছে।

কোপা আমেরিকায় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা

কোপা আমেরিকা ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীনতম মহাদেশীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট।
১৯১৬ সাল হতে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে, যারা ১৫ বার শিরোপাটি অর্জন করেছে।
এরপরই রয়েছে ১৪ বার কোপা জিতা আর্জেন্টিনা এবং ৮ বার কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
এতেই আর্জেন্টাইনরা লম্ফজম্ফ শুরু করে দেয় যে তারা ব্রাজিলের থেকে বেশী কোপার শিরেপা জিতেছে।
অনেকেরই হয়তো কপালে ভাঁজ পড়ার মত বিষয় বিশ্ব দাপানো ব্রাজিল ল্যাটিন আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব লড়াইয়ে এতো পিছিয়ে কেন।
সেটারই ব্যাখ্যা এবার দেবো।
কোপা আমেরিকা পূর্বে সাউথ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশীপ হিসেবে পরিচিত ছিলো।
সে সময়ে মাত্র ৪/৫ টা দল টুর্নামেন্টটিতে অংশগ্রহণ করতো।
আর ব্রাজিলও সেই দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশীপকে অতটা গুরুত্ব দিতো না,
সেজন্যই ১৯৭০ এর আগে ব্রাজিল টুর্নামেন্টটির ১০ টি আসর থেকে নাম কাটিয়ে নেয় যেসময়ে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ব্রাজিল পেলের হাত ধরে তিনটি বিশ্বকাপ জেতায় মগ্ন ছিলো।
ব্রাজিল অংশগ্রহণ করলেও বেশীরভাগ তারকা খেলোয়াড়দের বাদ দিয়ে বি দল পাঠাতো।
এমনকি পেলেও মাত্র একবারই সাউথ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশীপটি খেলেছিলো।
এ সব কিছুরই ফায়দা লুফে নিয়েছে আর্জেন্টিনা।
ব্রাজিলের অনুপস্থিতিতে এবং স্বল্প দলের অংশগ্রহণে তারাই সাউথ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশীপ জিততে থাকে।
বনে সিংহ না থাকায় গাধাই বনের রাজা হয়ে যায়।
কিন্তু সাউথ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশীপের যখন ১৯৭৫ সালে কোপা আমেরিকা নামে আর বেশী দল নিয়ে নতুন সংস্করণ হয় এবং ব্রাজিলও নিয়মিত অংশগ্রহণ শুরু করে, তখন থেকেই আর্জেন্টিনা আধিপত্য হারাতে শুরু করে।
কোপা আমেরিকা নামকরণের পর ব্রাজিলই সর্বোচ্চ পাঁচবার কোপা আমেরিকার ট্রফি জিতেছে।
অন্যদিকে পূর্বে দাপট দেখানো উরুগুয়ে জিততে পেরেছে ৪ টি আর আর্জেন্টিনা মাত্র ২ টি কোপা আমেরিকার শিরোপা।

ফিফা রেংকিং এ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা
ফিফা রেংকিং এর ক্ষেত্রেও পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের জয়জয়কার।
১৯৯৩ এর ডিসেম্বর মাস থেকে ফিফা রেংকিং সিষ্টেম চালু করার পর ব্রাজিলই সর্বাধিক ১২ বার বর্ষসেরা দল নির্বাচিত হয়েছে।
অন্যদিকে আর্জেন্টিনা মাত্র ১ বার।
সর্বাধিকক্ষণ একটানা এক নাম্বার পজিশন ধরে রাখার রেকর্ডও ব্রাজিলেরই।
১৯৯৪ সালের জুলাই হতে ২০০১ এর এপ্রিল পর্যন্ত সুদীর্ঘ ৮২ মাস ব্রাজিল রেংকিং এ ১ নাম্বারে ছিলো।
আবার জুলাই,২০০২ হতে জানুয়ারি,২০০৭ পর্যন্ত টানা ৫৫ মাস ১ নাম্বারে থেকে ব্রাজিলই দ্বিতীয় সর্বাধিকক্ষণ রেংকিং এ নাম্বার ওয়ানে থেকেছে।
ব্রাজিলই এইসব ছাড়িয়ে যেতে পারতো যদি আরও আগে থেকে রেংকিং পদ্ধতি শুধু করা হত।
কেননা ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে ব্রাজিল টানা দুবার বিশ্বকাপ জিতেছিলো।
আর আর্জেন্টিনা তো ১২ মাসই ১ নাম্বারে টিকতে পারেনি।
গুটি কয়েক মাস থেকে পরে আর খুজেই পাওয়া যায়না।
ব্রাজিল আবার যখন এক নাম্বারে যাবে তখন কয়েক মাস নয়, কয়েক বছর শীর্ষে থাকবে।
আর সেই সময় আসতে বেশী দেরী নেই।

ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার টাইটেলস

মেজর ট্রফিসমূহ ⇣⇣⇣

-বিশ্বকাপ ➧ ব্রাজিল ৫ টি,,,
আর্জেন্টিনা ১ টি
-কনফেডারেশন্স কাপ ➧ ব্রাজিল ৪ টি,,,
আর্জেন্টিনা ১ টি
-কোপা আমেরিকা ➧ ব্রাজিল ৮ টি,,,
আর্জেন্টিনা ১৪ টি
⇛ মোট ট্রফি ⇾ ব্রাজিল ১৭ টি, আর্জেন্টিনা ১৭ টি

অপ্রধান ও অনুর্ধ্বমূলক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ⇣⇣⇣
ব্রাজিল জিতেছে ৩৬ টি শিরোপা,
আর আর্জেন্টিনা জিতেছে ১৬ টি শিরোপা।
এছাড়া অলিম্পিক, প্যান আমেরিকান গেমস, কনমেবল প্রি অলিম্পিক টুর্নামেন্ট মিলিয়ে ব্রাজিলের গোল্ড মেডেল ১২ টি ও আর্জেন্টিনারও স্বর্ণপদক ১২ টি।
-
কিন্তু আর্জেন্টিনার অনেক সমর্থক অধিকাংশ টুর্নামেন্ট বাদ দিয়ে মেডেলও যোগ করে রিমিক্স ঘটিয়ে ট্রফির মনগড়া এমন একটা পরিসংখ্যান বানায় যেটাতে তারা এগিয়ে থাকে।
আসল কথা হল, ব্রাজিলের ৫ টা বিশ্বকাপের সামনেই তো ওদের সব অর্জন মলিন হয়ে যায়।
ব্রাজিলের সমান সংখ্যক ও সম লেভেলের ট্রফি পেতে হলে তাদের ব্রাজিলের খেলা থমকে দিয়ে নিজেদের আরও কয়েকশো বছর খেলতে হবে।

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা হেড টু হেড
দুদলের মোট মুখোমুখি ⇨ ১০২ বার
ব্রাজিল জিতেছে ⇨ ৩৯ টি
আর্জেন্টিনা জিতেছে ⇨ ৩৭ টি
ড্র হয়েছে ⇨ ২৬ টি
ব্রাজিলের গোলসংখ্যা ⇨ ১৫৯ টি
আর্জেন্টিনার গোলসংখ্যা ⇨ ১৫৯ টি
বি.দ্র : প্যানাল্টিতে জিতা ম্যাচগুলো ড্র ধরা হয়েছে।
প্যানাল্টির ক্ষেত্রে কোপা আমেরিকায় ব্রাজিল দুটি ও আর্জেন্টিনা একটি ম্যাচ নির্ধারণ সময়ে ড্র হবার পর প্যানাল্টিতে জয় নিশ্চিত করে।
ফিফা বিশ্বকাপ:
ব্রাজিল জিতেছে ২ টি
আর্জেন্টিনা জিতেছে ১ টি
ড্র হয়েছে ১ টি
ব্রাজিল জিতেছে ৯ টি
আর্জেন্টিনা জিতেছে ১৫ টি
ড্র হয়েছে ৭ টি
কনফেডারেশন্স কাপ:
ব্রাজিল জিতেছে ➛ ১ টি
আর্জেন্টিনা জিতেছে ➛ ০ টি
ড্র হয়েছে ➛ ০ টি
♯বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব:
ব্রাজিল জিতেছে ➛ ৪ টি
আর্জেন্টিনা জিতেছে ➛ ১ টি
ড্র হয়েছে ➛ ২ টি
ফ্রেন্ডলী ম্যাচ ও অন্যান্য টুর্নামেন্ট:
ব্রাজিল জিতেছে ➛ ২৩ টি
আর্জেন্টিনা জিতেছে ➛ ২০ টি
ড্র হয়েছে ➛ ১৬ টি
…....
বিশ্বকাপ, কনফেডারেশন্স কাপ, কোয়ালিফাইয়ার, ফ্রেন্ডলি সব কিছুতেই ব্রাজিল এগিয়ে।
শুধু কোপা আমেরিকাতে ব্রাজিল পিছিয়ে।
কারণ ঐ যে, সাউথ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশীপে ব্রাজিলের বি দলের সাথে আর্জেন্টিনা অনেক ম্যাচ জিতেছিলো।
নাহলে হেড টু হেডে আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের ধারে কাছেও থাকতোনা।
লেজেন্ড ফ্যাক্ট
ব্রাজিলের লেজেন্ডের কোন অভাব নেই। দলটিকে লেজেন্ড তৈরীর কারখানাও বলা যেতে পারে।
এমন অনেক খেলোয়াড় রয়েছে যারা নিজেকে সেরা প্রমাণ করার মাধ্যমে শুধু ব্রাজিলের নয়, পুরো ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরাদের একজনে পরিণত হয়েছে।
আবার অনেকেই নিজের কারিশমা দেখানো সত্ত্বেও সঠিক পরিচর্যা ও পরিচালনার অভাবে লুকায়িত রয়ে গেছে।
কিন্তু আর্জেন্টিনা লেজেন্ড তৈরীর দিক থেকেও অনেক পিছিয়ে।
ম্যারাডোনা ও মেসি এই দুজনই আর্জেন্টিনার সুপরিচিত লেজেন্ড।
এদের মধ্যে একদল ম্যারাডোনাকে সেরা আর অন্যদল মেসিকে আর্জেন্টিনার ইতিহাসের সেরা মানে।
ম্যারাডোনা চুরী বাটপারী করে হলেও আর্জেন্টিনাকে একটি বিশ্বকাপ জিতাতে পারলেও মেসির অর্জন আর্জেন্টিনায় এখনো শূন্য।
রানার্সআপ ট্রফি অর্জনের খাতায় থাকলেও সেগুলো বিশ্বকাপের তুলনায় কিছুই না।
এ নিয়েই নিজ দলের মধ্যেই ম্যারাডোনা আর মেসির ভক্তরা দলভুক্ত হয়ে ঝগরা করে থাকে কে সেরা সেটি নিয়ে।
সেদিকে আর গেলাম না।
আর ব্রাজিলে আদ্রিয়ানো নামের খেলোয়াড় যে কিনা ব্রাজিলে একটি কোপা ও একটি কনফেডারেশন্স কাপ জিতার সঙ্গে উভয় টুর্নামেন্টেই টপ স্কোরার এওয়ার্ড গোল্ডেন স্যু এবং সেইসাথে বেষ্ট প্লেয়ারও নির্বাচিত হয়েছে, তাকে ব্রাজিলের লেজেন্ডের কাতারেই ফেলা হয় না।
আদ্রিয়ানো আর্জেন্টিনায় জন্মালে হয়তো ম্যারাডোনা, মেসির সেরার যুদ্ধে সেও সামিল দিত।
এটা আর্জেন্টিনার সৌভাগ্য নাকি দূর্ভাগ্য সেটা তারাই ভালো বুঝবে।

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফ্যানবেজ
দুদলের ফ্যানবেজও দুই মেরুর।
ব্রাজিলিয়ানরা সর্বদা আত্ন চিন্তাতেই মগ্ন থাকে।
কিন্তু আর্জেন্টাইন ফ্যানদের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন।
প্রতিপক্ষকে নিচু করে দেখানোতেই তারা মজা পায় বেশী।
আর প্রতিপক্ষ ব্রাজিল হলে তো কথাই নাই।
গ্যালারী থেকে দুয়ো দেয়া, নেইমারের ইনজুরীতে নকল মেরুদন্ড নিয়ে উল্লাসের মিছিল করা, প্ল্যাকার্ডে 7up লিখে নিয়ে যাওয়া এসব থেকেই তাদের খারাপ ফ্যানবেজের পরিচয় মেলে।
আর বাংলাদেশী আর্জেন্টাইন ফ্যানবেজের এসব করার সুযোগ না মিললেও তাদের ইস্পাতদৃঢ় চাপার জোর সবকিছুকে হার মানিয়ে দেয়।
সব জাগাতেই তারা কুকুরের মত 7up বলে বলে আর্তনাদ করে।
৭ গোল দিয়েছিলো জার্মানী। কই, তাদের তো এটা নিয়ে এতো মাতামাতি করতে দেখিনি।
তাহলে আর্জেন্টাইনদের এতো লাফালাফি কিসের?
নাকি জার্মানীকে তারা আব্বা মানে, তাই আব্বার অর্জনেই তারা খুশী হয়ে নিজেদের খরায় পানির ছিটা পায়।
এই জার্মানীর কাছেই গত তিন বিশ্বকাপ আসরে হেরে আর্জেন্টিনার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিলো।
তাতে কি? শত হোক আব্বাই তো তাইনা।
আর্জেন্টিনারও বলিভিয়া, চেকোস্লোভাকিয়ার মত ফুটবল পরাশক্তির সাথে ৫/৬ গোল খাওয়ার রেকর্ড আছে।
২০০৯ তেই বলিভিয়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৬ টা ভরেছিলো মেসির আর্জেন্টিনার জ্বালে।
কিন্তু বলিভিয়ার এই হোম এডভান্টেজকে তারা প্রতিকূল পরিবেশ ছিলো বলেই এতো গোল দিসে বলে উড়িয়ে দেয়।
তাহলে উরুগুয়ে, ব্রাজিল, চিলির জন্য মনে হয় অনুকূল পরিবেশ ছিলো।
এরকম আরও সুন্দর সুন্দর লজিকের নজির মেলে তাদের কাছ থেকে।
দলের দুঃসময়ে অন্যদের পাগলের মত ট্রল করে জয়ের আনন্দ কিভাবে পাওয়া যায়, সেটা আর্জেন্টিনার ফ্যানবেজ দেখলেই বুঝা যায়।
তাদেরকে আমার তরফ থেকে গ্র্যান্ড সেলুট।

দুদলের ইতিহাস হতে বর্তমানের মধ্যকার বিবর্তন
ব্রাজিলের ইতিহাস শত রেকর্ডে ঠাসা গৌরবময় এক ইতিহাস। এই ইতিহাস দেখে যে কারোরই ঈর্ষা হওয়াটা স্বাভাবিক।
আর এটির সাথে পাল্লা দিয়ে কথা বলা তো আকাশ কুসুম চিন্তা।
তাই আর্জেন্টিনার সমর্থকরা সুন্দর করে বলে দেয়, অতীত ইতিহাস বাদ দিয়ে বর্তমান দেখো।
এমন কথা শুলনে মন একটা পৈচাশিক হাসি দিয়ে উঠে।
কারণ আর্জেন্টিনার ইতিহাস যেমন কালো, বর্তমানেও নেই তেমন আলো।
ইতিহাসকে অবজ্ঞা করে বর্তমানের দোহাই যারা দেয় তাদের বর্তমানই তো সুখকর নয়।
উপরন্তু তাদের অর্জন দেখার জন্য সুদূর অতীত ইতিহাসে যেতে হবে।
তাও আবার এই শতাব্দীতে না, পূর্বের বিংশ শতাব্দীতে।
কারণ তাদের শেষ কোপা ১৯৯৩ তে, শেষ কনফেডারেশন্স কাপ ১৯৯২তে আর সর্বশেষ বিশ্বকাপ ১৯৮৬ তে হাত দিয়ে গোল করে।
আর ব্রাজিলের শেষ বিশ্বকাপ ২০০২, শেষ কোপার শিরোপা ২০০৭ ও শেষ কনফেডারেশন্স কাপ গত আসরেই ২০১৩ সালে। অর্থাৎ ব্রাজিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন।
মানলাম আর্জেন্টিনা গত তিন বছরে তিনটি রানার্সআপ ট্রফি পেয়েছে।
এটা নিঃসন্দেহে আর্জেন্টিনার ইতিহাসের স্বর্ণযুগ, কিন্তু সমগ্র ফুটবল ইতিহাসের জন্য এটি আহামরী কিছুই না।
কারণ ইতিহাস খালি চ্যাম্পিয়নদেরই ধারণ করে।
তাদের বর্তমান অর্জন ভবিষ্যতে ফুটবল ইতিহাসের এমন একটা অধ্যায় হয়ে থাকবে যেটা কেউ স্মরণও করবেনা।
কিন্তু তবুও তারা ডিফেন্ডিং রানার্সআপ হয়ে ব্রাজিলের সাথে নিজেদের তুলনা করতে আসে।
২৪ বছর ধরে শিরোপা খরার যে স্ট্রিক তারা বানিয়েছে সেটা যে বর্তমানকাল পর্যন্ত বিরাজমান করছে, সেটার হুশ তাদের নাই।
আর একটা দলকে মাপার জন্য ইতিহাসই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
ইতিহাস বাদ দিলে ফুটবলে আপসেট বলে কোন শব্দ থাকতোনা। আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া সব এক সারির দল হতো।
তাই ইতিহাসকে ছোট করে দেখার কোন উপায় নেই।
তবুও তাদের অবজ্ঞাকে আশকারা দেয়া যেত যদি তাদের বর্তমান ভালো থাকতো।
কিন্তু, যাদের অর্জন ইতিহাসের এক কোণায় চুপসে গেছে, বর্তমানেও যারা ২৪ বছরের খরা কাটানোর জন্য প্রতিনিয়ত ধুকছে, তাদের প্রতাপ দেখলে বড়ই হাসি পায়।
যাদের শরীরে ত্যানা নেই, তাদেরই অন্যকে ফকির বলা আস্ত বড় এক বিনোদন।
প্রথমত যারা এতো বড় পোষ্ট কষ্ট করে পড়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ।

Comments

Popular posts from this blog

শাবনূরের লাইফস্টাইল অজানা অনেক তথ্য I আসল নাম | উচ্চতা I ওজন I শারীরিক পরিমাপ | বয়স | পড়ালেখা | স্বামী | ক্যারিয়ারের অর্জন | বাড়ি | জীবনী এবং উল্লেখযোগ্য সিনেমায় ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্ককে জানতে অবশ্যই পড়ুন

বাংলাদেশী ব্যান্ডের আন্ডাররেটেড গান সমূহের তালিকা দেয়া হলো । নতুন কিছু গানের স্বাদ পেতে অবশ্যই পড়ুন।

পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ২০ টি বস্তু, যা এতটাই দামী আপনি শুনে অবাক না হয়ে পারবেন না,জানতে অবশ্যই পড়ুন।