কয়েকজন গানপাগল ছেলের হাত ধরে তৈরী হয়েছিলো ব্যান্ড 'আধপাগলা'।ব্যান্ডটি সম্পর্ককে জানতে পড়ুন
আমরা গানপ্রিয় জাতি।
গান আমরা শুধুমাত্র বিনোদন এর জন্যেই শুনি না। অনেকসময় আমরা গানকে হাতিয়ার হিসেবেও প্রদর্শন করি।
আমাদের পূর্বপুরুষ তথা পূর্বপ্রজন্ম এ পথে হেঁটে গিয়েছিলেন!
গানের মাধ্যমে অন্যায় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা, আমাদের নাড়ীতেই বিদ্যমান!
বর্তমানে আমাদের আশে পাশে অনেক ব্যান্ডই গড়ে উঠছে,উঠবে।
তেমনি ২০১৪ সালে এইস.এস.সি পড়ুয়া কয়েকজন গানপাগল ছেলের হাত ধরে তৈরী হয়েছিলো ব্যান্ড 'আধপাগলা'।
নামটা একটু উদ্ভট শোনাচ্ছে!
বাহির হতে কোনো কিছুই যাচাই করা যায় না মূলত!
আধপাগলা এর ভিতরে যা কিছু আছে তা একবার পরখ করার পর হয়তো আপনি,আমিও আধপাগলা হয়ে যাবো এই আশায় যে কখন পুরো পাগল হবো!!
এই কথা বললাম কারন আধপাগলা এর গানের কথাগুলো হৃদয় ছোঁয়ানো এবং সমাজের অন্যায়,নিপীরিত মানুষদেরকে নিয়ে লিখা
ব্যান্ড: আধপাগলা
অরিজিন: রংপুর
যাত্রাকাল: ২০১৪ হতে বর্তমান..
জনরা: ওদের কোনো জনরা নেই । তবে সাইকেডেলিক গান করতে ওরা ভালোবাসে। সহজভাবে বললে ওদের জনরা হইলো ইন্ডিপেনডেন্ট জনরা।
ব্যান্ড মেম্বার:
১. অর্ঘ্য দেব। -ভোকালিস্ট, গীটারিস্ট
২. রবি ইসলাম প্রামাণিক - ভোকালিস্ট, গীটারিস্ট
৩.মুগ্ধ ইসলাম - গীটারিস্ট
৪. সাঈদ প্রান্ত - বেইজিস্ট
৫. নাজমুস সাকিব - লিরিসিস্ট, কাহনিস্ট, হারমোনিসিস্ট।
'আধপাগলা' ব্যান্ডের সূচনালগ্ন সাকিবের বক্তব্যে:-
স্কুল লাইফের শেষের দিকে ঠিক করলাম এবার একটা ব্যান্ড করবো। এমন একটা ব্যান্ড যেরকম ব্যান্ড রংপুরে আর নেই। আমরা সময়ের গান করতে চাইতাম। কিন্তু একা একা তো ব্যান্ড হয় না। পাশে দাঁড়ালো রবি আর ফুয়াদ। রবি কখনো গান শেখেনি। ফুয়াদ গীটার বাজাতো। আমি কী করবো? স্কুলের ব্যাকবেঞ্চার হওয়ার সুবাদে বেঞ্চ পিটিয়ে গান করতাম।ক্লাসে। তাল সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা ছিলো। আমরা একটা কাহন বানিয়ে ফেললাম। রংপুরের প্রথম কাহনটা আমাদেরই ছিলো। যেহেতু আমরা কেউই গান সম্পর্কে সেভাবে জানি না, কিন্তু একটা ব্যান্ড করে ফেলেছি। এই পাগলামি থেকেই ব্যান্ডের নাম দিলাম আধপাগলা। নটরডেম কলেজে ভর্তি হওয়ার ফলে ফুয়াদ ঢাকায় চলে যায়। তখন ব্যান্ডে যোগ দেয় মুগ্ধ ভাই। এভাবেই চলছিলো। একদিন সব বন্ধুরা টাকা তুলে আমাকে একটা নতুন।কাহন কিনে দেয়। আধপাগলা পথ চলা শুরু করলো। প্রচুর ঠাট্টা করতো অনেকেই আমাদের নিয়ে। আমরা হাসিমুখেই সব গ্রহণ করেছি। এর এক বছর পর আমাদের সাথে যোগ দেয় অর্ঘ্য। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে হবিগঞ্জের চা শ্রমিকেরা তাদের ভূমি রক্ষার জন্য আন্দোলন করে। তাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আমরা একটা গান করি, "ফেলবো কোথায় দম?"। সবাই প্রচুর ভালোবাসা জানায়। এরপর আসে আমাদের আরও কয়েকটি গান। এরপর আমাদের ব্যান্ডে বেইজিস্ট হিসেবে যোগ দেয় প্রান্ত। আমরা সব সময়ই চেয়েছিলাম যে আমাদের প্রতিটা গানেই সবাইকে নতুন কিছু শোনাতে।।নতুন গল্প বলতে। একাডেমিক কারণে এখন।সবাই আলাদা থাকলেও সুযোগ পেলেই একসাথে হয়ে গান করে যাচ্ছি। এই তো এভাবেই পথ চলছি।
ওরা এখন পর্যন্ত মোট ৫ টা গান রিলিজ দিয়েছে। আর ৫ টি গানই কপিরাইটবিহীন এবং সম্পূর্ণ অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তৈরী করা।
১. মানুষ:
২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারে একটা স্কুলে তালেবান হামলা হয়। প্রায় দেড়শো শিক্ষার্থী মারা যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আধপাগলা সারা পৃথিবীতে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে 'মানুষ' গান করে।
২. রাজা তাড়ানোর গান:
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিকের ঘটনা। পরের মাসে আধপাগলা ব্যান্ডের কয়েকজন এর HSC পরীক্ষা। এর মধ্যে সবার কানে কানেই পৌছে যায় ওদের প্রাণের স্কুল, রংপুর জিলা স্কুলের মাঠ অবৈধভাবে দখল করতে চাচ্ছে ক্ষমতাধর রাজনৈতিক নেতারা। সেখানে নাকি মার্কেট বানাবে। সেই ঘটনায় প্রত্যেকটা ছাত্র রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। আধপাগলাও রাস্তায় নামে তাদের 'রাজা তাড়ানোর গান' নিয়ে।
৩. ফেলবো কোথায় দম:
গানটি মূলত হবিগঞ্জের চা শ্রমিকদের ভুমি রক্ষার্থে চা শ্রমিকরা আন্দোলন করেছিলো। তাদের প্রতি সংহতি জানানোর জন্যে ওরা 'ফেলবো কোথায় দম' গানটি উন্মুক্ত করে।
৪. সেকেন্ডহ্যান্ড মন:
সেকেন্ডহ্যান্ড মন বৃষ্টিস্নাত নগরের গান। যে নগরে এক দুঃখী মানুষ বৃষ্টিতে ভিজে গভীর রাতে এই গান গাইছে তাকে ছেড়ে যাওয়া কোনো এক প্রেমিকাকে স্মরণ করে। বৃষ্টি থামলে চাঁদ বিষণ্ণ জোছনা ছড়ায়। দুই একটা গাড়ি হর্ণ বাজিয়ে চলে যায়। আর দুঃখী মানুষটা পুরোনো প্রেমিকার কথা মনে করে গান গায়। আসলে মন কখনো সেকেন্ডহ্যান্ড হয় না। কিন্তু দুঃখী মানুষটা নিজের মনটাকে সেকেন্ডহ্যান্ড ভাবে। কল্পনার আর কী দোষ বলেন?
এই চিন্তাধারা থেকেই 'আধপাগলা' এই গানটি গতমাসেই উন্মুক্ত করে।
৫. পাহাড়ের কান্না:
লংদুতে জ্বলছে আগুন। মানুষগুলো ক্যামন আছে? পাহাড়ের বুনোফুলগুলো বেঁচে আছে? কী করবো এতদূরে বসে? একটা গান ছাড়া আর কিই বা দেওয়ার আছে? তাই লংদুর পাশে দাঁড়ানোর জন্য আধপাগলার নতুন গান "পাহাড়ের কান্না"।
তাদের অনুপ্রেরণা :
'মহীনের ঘোড়াগুলি' হলো ওদের প্রধান ইন্সিপিরেশন।
এরপর শিরোনামহীন,মেঘদল,জলের গান,পিংক ফ্লয়েড,বিটলস ইত্যাদি।
পোস্ট ক্রেডিট : শাওন ঝিনুক
গান আমরা শুধুমাত্র বিনোদন এর জন্যেই শুনি না। অনেকসময় আমরা গানকে হাতিয়ার হিসেবেও প্রদর্শন করি।
আমাদের পূর্বপুরুষ তথা পূর্বপ্রজন্ম এ পথে হেঁটে গিয়েছিলেন!
গানের মাধ্যমে অন্যায় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা, আমাদের নাড়ীতেই বিদ্যমান!
বর্তমানে আমাদের আশে পাশে অনেক ব্যান্ডই গড়ে উঠছে,উঠবে।
তেমনি ২০১৪ সালে এইস.এস.সি পড়ুয়া কয়েকজন গানপাগল ছেলের হাত ধরে তৈরী হয়েছিলো ব্যান্ড 'আধপাগলা'।
নামটা একটু উদ্ভট শোনাচ্ছে!
বাহির হতে কোনো কিছুই যাচাই করা যায় না মূলত!
আধপাগলা এর ভিতরে যা কিছু আছে তা একবার পরখ করার পর হয়তো আপনি,আমিও আধপাগলা হয়ে যাবো এই আশায় যে কখন পুরো পাগল হবো!!
এই কথা বললাম কারন আধপাগলা এর গানের কথাগুলো হৃদয় ছোঁয়ানো এবং সমাজের অন্যায়,নিপীরিত মানুষদেরকে নিয়ে লিখা
ব্যান্ড: আধপাগলা
অরিজিন: রংপুর
যাত্রাকাল: ২০১৪ হতে বর্তমান..
জনরা: ওদের কোনো জনরা নেই । তবে সাইকেডেলিক গান করতে ওরা ভালোবাসে। সহজভাবে বললে ওদের জনরা হইলো ইন্ডিপেনডেন্ট জনরা।
ব্যান্ড মেম্বার:
১. অর্ঘ্য দেব। -ভোকালিস্ট, গীটারিস্ট
২. রবি ইসলাম প্রামাণিক - ভোকালিস্ট, গীটারিস্ট
৩.মুগ্ধ ইসলাম - গীটারিস্ট
৪. সাঈদ প্রান্ত - বেইজিস্ট
৫. নাজমুস সাকিব - লিরিসিস্ট, কাহনিস্ট, হারমোনিসিস্ট।
'আধপাগলা' ব্যান্ডের সূচনালগ্ন সাকিবের বক্তব্যে:-
স্কুল লাইফের শেষের দিকে ঠিক করলাম এবার একটা ব্যান্ড করবো। এমন একটা ব্যান্ড যেরকম ব্যান্ড রংপুরে আর নেই। আমরা সময়ের গান করতে চাইতাম। কিন্তু একা একা তো ব্যান্ড হয় না। পাশে দাঁড়ালো রবি আর ফুয়াদ। রবি কখনো গান শেখেনি। ফুয়াদ গীটার বাজাতো। আমি কী করবো? স্কুলের ব্যাকবেঞ্চার হওয়ার সুবাদে বেঞ্চ পিটিয়ে গান করতাম।ক্লাসে। তাল সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা ছিলো। আমরা একটা কাহন বানিয়ে ফেললাম। রংপুরের প্রথম কাহনটা আমাদেরই ছিলো। যেহেতু আমরা কেউই গান সম্পর্কে সেভাবে জানি না, কিন্তু একটা ব্যান্ড করে ফেলেছি। এই পাগলামি থেকেই ব্যান্ডের নাম দিলাম আধপাগলা। নটরডেম কলেজে ভর্তি হওয়ার ফলে ফুয়াদ ঢাকায় চলে যায়। তখন ব্যান্ডে যোগ দেয় মুগ্ধ ভাই। এভাবেই চলছিলো। একদিন সব বন্ধুরা টাকা তুলে আমাকে একটা নতুন।কাহন কিনে দেয়। আধপাগলা পথ চলা শুরু করলো। প্রচুর ঠাট্টা করতো অনেকেই আমাদের নিয়ে। আমরা হাসিমুখেই সব গ্রহণ করেছি। এর এক বছর পর আমাদের সাথে যোগ দেয় অর্ঘ্য। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে হবিগঞ্জের চা শ্রমিকেরা তাদের ভূমি রক্ষার জন্য আন্দোলন করে। তাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আমরা একটা গান করি, "ফেলবো কোথায় দম?"। সবাই প্রচুর ভালোবাসা জানায়। এরপর আসে আমাদের আরও কয়েকটি গান। এরপর আমাদের ব্যান্ডে বেইজিস্ট হিসেবে যোগ দেয় প্রান্ত। আমরা সব সময়ই চেয়েছিলাম যে আমাদের প্রতিটা গানেই সবাইকে নতুন কিছু শোনাতে।।নতুন গল্প বলতে। একাডেমিক কারণে এখন।সবাই আলাদা থাকলেও সুযোগ পেলেই একসাথে হয়ে গান করে যাচ্ছি। এই তো এভাবেই পথ চলছি।
ওরা এখন পর্যন্ত মোট ৫ টা গান রিলিজ দিয়েছে। আর ৫ টি গানই কপিরাইটবিহীন এবং সম্পূর্ণ অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তৈরী করা।
১. মানুষ:
২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারে একটা স্কুলে তালেবান হামলা হয়। প্রায় দেড়শো শিক্ষার্থী মারা যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আধপাগলা সারা পৃথিবীতে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে 'মানুষ' গান করে।
২. রাজা তাড়ানোর গান:
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিকের ঘটনা। পরের মাসে আধপাগলা ব্যান্ডের কয়েকজন এর HSC পরীক্ষা। এর মধ্যে সবার কানে কানেই পৌছে যায় ওদের প্রাণের স্কুল, রংপুর জিলা স্কুলের মাঠ অবৈধভাবে দখল করতে চাচ্ছে ক্ষমতাধর রাজনৈতিক নেতারা। সেখানে নাকি মার্কেট বানাবে। সেই ঘটনায় প্রত্যেকটা ছাত্র রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। আধপাগলাও রাস্তায় নামে তাদের 'রাজা তাড়ানোর গান' নিয়ে।
৩. ফেলবো কোথায় দম:
গানটি মূলত হবিগঞ্জের চা শ্রমিকদের ভুমি রক্ষার্থে চা শ্রমিকরা আন্দোলন করেছিলো। তাদের প্রতি সংহতি জানানোর জন্যে ওরা 'ফেলবো কোথায় দম' গানটি উন্মুক্ত করে।
৪. সেকেন্ডহ্যান্ড মন:
সেকেন্ডহ্যান্ড মন বৃষ্টিস্নাত নগরের গান। যে নগরে এক দুঃখী মানুষ বৃষ্টিতে ভিজে গভীর রাতে এই গান গাইছে তাকে ছেড়ে যাওয়া কোনো এক প্রেমিকাকে স্মরণ করে। বৃষ্টি থামলে চাঁদ বিষণ্ণ জোছনা ছড়ায়। দুই একটা গাড়ি হর্ণ বাজিয়ে চলে যায়। আর দুঃখী মানুষটা পুরোনো প্রেমিকার কথা মনে করে গান গায়। আসলে মন কখনো সেকেন্ডহ্যান্ড হয় না। কিন্তু দুঃখী মানুষটা নিজের মনটাকে সেকেন্ডহ্যান্ড ভাবে। কল্পনার আর কী দোষ বলেন?
এই চিন্তাধারা থেকেই 'আধপাগলা' এই গানটি গতমাসেই উন্মুক্ত করে।
৫. পাহাড়ের কান্না:
লংদুতে জ্বলছে আগুন। মানুষগুলো ক্যামন আছে? পাহাড়ের বুনোফুলগুলো বেঁচে আছে? কী করবো এতদূরে বসে? একটা গান ছাড়া আর কিই বা দেওয়ার আছে? তাই লংদুর পাশে দাঁড়ানোর জন্য আধপাগলার নতুন গান "পাহাড়ের কান্না"।
তাদের অনুপ্রেরণা :
'মহীনের ঘোড়াগুলি' হলো ওদের প্রধান ইন্সিপিরেশন।
এরপর শিরোনামহীন,মেঘদল,জলের গান,পিংক ফ্লয়েড,বিটলস ইত্যাদি।
পোস্ট ক্রেডিট : শাওন ঝিনুক
Comments
Post a Comment