শতভক্তের ভালোবাসার নাগরিক বাউল আমাদের জেমস।
বাংলাদেশী ব্যান্ডের সব থেকে পরিচিত মুখ এবং খুব জনপ্রিয় একজন শিল্পীকে নিয়ে কথা বলবো আজ। যার গান শুনেন না এমন গান ভক্ত মানুষ হয়তো বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না। তার গান যে শুনেছে সেই তার কণ্ঠের জাদুতে ভক্ত হতে বাধ্য হয়েছে। এতক্ষণে হয়তো বুঝে গিয়েছেন কার কথা বলছি। তিনি আর কেউ না আমাদের সবার প্রিয় রক মিউজিক শিল্পী জেমস এর কোথায় বলছিলাম এতক্ষণ। যাকে আমরা জেমস নাম চিনলেও তার আসল নাম কিন্তু জেমস না। তার আসল এবং পুরো না হচ্ছে ফারুক মাহফুজ আনাম। হ্যা তাকেই আমরা ভালোবেসে জেমস নামে ডাকি। তিনি শুধু ভক্তদের কাছে একজন সাধারণ শিল্পী নয় তিনি তার ভক্তদের কাছে হচ্ছেন গুরু। তাকে তার ভক্তরা গুরু বলেই সম্মান করেন। তাকে যে যেই নাম চিনুক না, কেন বাংলাদেশি রক মিউজিক শোনেন কিন্তু একবারের জন্য তার গান শুনেন নি,এমন কোনো রক মিউজিক ভক্তকে হয়তো বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ বাংলাদেশী রক মিউজিক যে পূর্ণতা পেয়েছে তার জন্যই।
ফারুক মাহফুজ আনাম মানে জেমস জন্মগ্রহণ করেন উত্তরবঙ্গের নওগাঁর পত্নীতলায়।জেমস এর জন্ম উত্তরবঙ্গে হলে ও তিনি বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রামে। জেমসের বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারী। তবে তার কিছু দিন পড়েই তার বাবা চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পড়ুন করার সুযোগ পান। জেমস এত তাই গান পাগল ছেলে ছিল যে সে তার বাবার সাথে গানের জন্য অভিমান করে ঘর ছেড়ে চলে যান। ঘর ছেড়ে চলে যাবার পর তার আশ্রয় জোটে চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিংয়ে।আর এই আজিজ বোর্ডিং কে ঘিরেই তার তার গানের জগত গড়ে উঠে। আর এই আজিজ বোর্ডিং থেকেই জন্ম হয় জেমসের প্রথম ব্যান্ড ‘ফিলিংস’-এর।
আর জেমসের প্রথম ব্যান্ড ‘ফিলিংস’-এর প্রথম অ্যালবাম বাজারে আসে ১৯৮৭ সালে। সেই প্রথম অ্যালবাম এর নাম ছিল স্টেশন রোড। এই অ্যালবামের মাধ্যমেই তার গানের জগতে যাত্রা শুরু হয়।এর পর ঠিক এক বছর পর জেমস তার একক একটি অ্যালবাম বাজারে ছাড়েন। তার সেই একক অ্যালবামটির নাম ছিল অনন্যা।এই অ্যালবামের পর তার গানের জগতে তার পথচলা সুন্দর হতে থাকে। তার জেমস তার প্রথম ব্যান্ড ‘ফিলিংস এর নাম পরিবর্তন করে ব্যান্ডের নাম রাখেন নগর বাউল।
জেমস শুরু থেকেই নিজেকে অন্যান্য রক শিল্পীদের মতো ভাবেন নি। তিনি নিজেকে ভেবেছেন একটু অন্যরকম রক শিল্পী হিসেবে। জেমস তার সংগীত ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই ব্যান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু ব্যান্ডের সাথে যুক্ত থাকা সত্ত্বে ও তিনি ব্যান্ড থেকে ব্যাক্তি জেমসকেই অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আর এই সম্পর্কে জানতে আপনাকে বেশি কষ্ট করতে হবে না শুধু একটু ভেবে দেখুন ,আমরা কিন্তু নগর বাউল কিংবা ফিলিংস বলতেই আমরা বুঝি জেমসকে এবং চিনি ও শুধু জেমসকেই।
বাংলাদেশের রক মিউজিকে শিল্পী জেমসের সবচেয়ে বড় অবদানটা বোধহয় মানুষের কাছে রক মিউজিকের গ্রহণযোগ্যতা তৈরির ক্ষেত্রে। আজ আমাদের দেশে রক মিউজিকের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। কিন্তু জেমসের যাত্রাকালে মানে ৮০-৯০ দশকের দিকে আমাদের দেশে মোটেও জনপ্রিয়তা এখনকার মতো ছিল না। তখন শহরে সপ্তাহে ৮ -১০ টা কনসার্ট হবার মতো কোনো পরিবেশ ছিল না, আর সব থেকে বেশি অভাব ছিল রক মিউজিকের দর্শক যার ফলে কনসার্ট হলে ও তেমন দর্শক পাওয়া যেত না। তখনকার সময়ে রক মিউজিকটা ছিল শহরের গুটি কয়েক কিশোর-কিশোরীর গল্প,আড্ডার মধ্যেই আবদ্ধ ছিল। আর সেই সময় মিউজিকের সমালোচনাও হতো খুব বেশি। যার ফলে প্রবীণেরা ও ব্যান্ড সংগীত ভালো ভাবে গ্রহণ করে নি। তখনকার সময় জেমসের এই গান গুলোকে বা ব্যান্ড সংগীতকে অপসংস্কৃতির চর্চা বলে ও অনেকবার তার কাজ কে প্রশ্নবিদ্ধও করা হয়েছে। যার ফলে তখন তার ব্যান্ড সংগীতকে নিয়ে পথচলা ছিল অনেক কঠিন।
কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতার মাঝেই জেমস নিজেকে করে তুলেছে অনন্য। তখন জেমস তার গানের মধ্যে তৈরী করেন এক নতুন ভাষা ,যা সেই সময় দেশের সকলেই গ্রহণ করে নিয়েছিল খুব ভালো ভাবেই। দেশের ব্যান্ড সংগীতের কনসার্ট এর উন্মাদনার শুরুও এই জেমস এর হাত ধরেই। তখন তার কিছু গান যেমন দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘বাংলাদেশ’, ‘মীরাবাঈ’ সুন্দরীতমা আমার’, মান্নান মিয়ার তিতাস মলম’, ‘লেইস ফিতা লেইস’ খুব জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং এই গান গুলো তখন পাড়ার প্রত্যেকটি উৎসবে বাজাতে শুরু হয়। জেমস এর আমি তারায় তারায় রটিয়ে দিবো গানটির সাথে শুধু তখনকার রক গানের শ্রোতারাই শুধু মাথা দোলায়নি ,এই গানের সুর-কথার সাথে মাথা দোলিয়েছে দেশের সকল সকল অবস্থান এর সকল বয়সের মানুষ। তখন এলাকার মুরুব্বি যারা ব্যান্ডের গান বলতেই চিল্লাচিল্লি মনে করতো তারাও জেমস এর গানের এই কথা গুলোর সাথে ঠোঁট মিলিয়েছে। গানটি হলো , ভোরের তারা রাতের তারা মাকে জানিয়ে দিস/ অনেক কেঁদেছি/ আর কাঁদতে পারি না। তখন আস্তে আস্তে সকলের ব্যান্ডের রক গানের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হতে থাকে ,আর তখন জেমস এর গানের গ্রহণ যোগ্যতা ও অনেক বৃদ্ধি পেয়ে যায়।
আমাদের এই লিখার শুরুতেই বলেছি ,জেমস তার ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় জুড়ে, তার সব চেয়ে বেশি মনোযোগ ছিল তার নিজের সলো ক্যারিয়ারের দিকে। আর তাই নিজের সলো ক্যারিয়ার কিভাবে এগিয়ে নিবেন সেই চিন্তায় তিনি বেশি করেছেন। জেমস কখনই শুধু একটি বড় ব্যান্ড দলের স্বপ্ন দেখে নি। তিনি হতে চেয়েছিলেন জিম মরিসন, এরিক ক্লাপটন, মার্ক নফলারদের মতো একজন প্রতিষ্ঠিত সলো রক আর্টিস্ট হতে চেয়েছিলেন। আর জেমস তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে সেই স্বপ্নকেই সারা জীবন তাড়া করেছেন। তবে তিনি কত টুকু সফল হয়েছেন সেইটা বলার উপায় নেই, তবে এই স্বপ্ন তার থেকে ভালো বাস্তবায়ন অন্তত এই দেশে আর কেউ করতে পারে নি এইটা বলা যায় কোনো কিছু চিন্তা না করেই।তিনি শুধু বাংলা গানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন নি । তিনি বাংলা গানের পাশাপাশি করেছেন কিছু হিন্দি গান। আর সেই গান গুলোর জন্য বলিউডেও পেয়েছেন তুমুল জনপ্রিয়তা। তার করা বলিউডে হিন্দি গান গুলোর মধ্যে ভিগি ভিগি’, ‘চল চলে’, ‘আলবিদা’, ‘বেবাসি’ এই গানগুলোর মাধ্যমে মাতিয়েছেন পুরো বলিউড। তার বলিউডে করা ‘ভিগি ভিগি’ গানটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো যে এই গানটি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বলিউড টপচার্টের শীর্ষে ছিল।
জেমসের গানের সবথেকে অসাধারণত্বের জায়গা হলো তার গানের কথা। তার গানের কথা গুলো এতটাই ভালো ছিল যে ,তার গান একবার শুনলে মন ছুঁয়ে যেত। তার এই গান গুলো ও লিখা হতো অনেক যত্ন করে। তখন কার সময়ের সেরা সব গীতিকার মারজুক রাসেল, গোলাম মোরশেদ, প্রিন্স মাহমুদ জুয়েল,আসিফ ইকবাল, লতিফুল ইসলাম শিবলি, বাপ্পি খান, দেহলভি,এর মতো সুরকারদের তার জন্য আলাদা করে গান লিখতে হতো। আর এই জন্যই হয়তো জেমসের গানগুলো আজ ও বেঁচে রয়েছে ঠিক আগের মতোই। তার গান গুলো এখনকার সময়ের কিশোর বয়সের ছেলে- মেয়েদের কাছে ও অনেক জনপ্রিয়। জেমসের বের হওয়া ২০-২৫ বছর আগের গানগুলো এখন যারা কিশোর বয়সে নতুন করে পা দিচ্ছে তারা ও শুনছে খুব আগ্রহের সাথে। তার এই গানগুলো মাদকতা এত সময় পরেও এক বিন্দুও কমেনি যা আসলেই অবাক হবার মতো ।
আর এই জন্যই হয়তো জেমস শুধুমাত্র একজন শিল্পী হয়ে আটকে থাকেন নি। লম্বা কোঁকড়ানো চুল, কালো আলখেল্লা, হাতে গিটার, চোখ-মুখের কাঠিন্য এসবকিছু নিয়ে তিনি একজন রকস্টার।হয়েছেন সবার পছন্দের রকস্টার। সম্ভবত আমাদের আমাদের দেশের একমাত্র রকস্টার হচ্ছে জেমস।তার কারণ তিনি নিজেই একটি ব্র্যান্ড,আর নিজেকে পরিণত করেছেন একজন আইকন হিসেবে ।
ফারুক মাহফুজ আনাম মানে জেমস জন্মগ্রহণ করেন উত্তরবঙ্গের নওগাঁর পত্নীতলায়।জেমস এর জন্ম উত্তরবঙ্গে হলে ও তিনি বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রামে। জেমসের বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারী। তবে তার কিছু দিন পড়েই তার বাবা চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পড়ুন করার সুযোগ পান। জেমস এত তাই গান পাগল ছেলে ছিল যে সে তার বাবার সাথে গানের জন্য অভিমান করে ঘর ছেড়ে চলে যান। ঘর ছেড়ে চলে যাবার পর তার আশ্রয় জোটে চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিংয়ে।আর এই আজিজ বোর্ডিং কে ঘিরেই তার তার গানের জগত গড়ে উঠে। আর এই আজিজ বোর্ডিং থেকেই জন্ম হয় জেমসের প্রথম ব্যান্ড ‘ফিলিংস’-এর।
আর জেমসের প্রথম ব্যান্ড ‘ফিলিংস’-এর প্রথম অ্যালবাম বাজারে আসে ১৯৮৭ সালে। সেই প্রথম অ্যালবাম এর নাম ছিল স্টেশন রোড। এই অ্যালবামের মাধ্যমেই তার গানের জগতে যাত্রা শুরু হয়।এর পর ঠিক এক বছর পর জেমস তার একক একটি অ্যালবাম বাজারে ছাড়েন। তার সেই একক অ্যালবামটির নাম ছিল অনন্যা।এই অ্যালবামের পর তার গানের জগতে তার পথচলা সুন্দর হতে থাকে। তার জেমস তার প্রথম ব্যান্ড ‘ফিলিংস এর নাম পরিবর্তন করে ব্যান্ডের নাম রাখেন নগর বাউল।
জেমস শুরু থেকেই নিজেকে অন্যান্য রক শিল্পীদের মতো ভাবেন নি। তিনি নিজেকে ভেবেছেন একটু অন্যরকম রক শিল্পী হিসেবে। জেমস তার সংগীত ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই ব্যান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু ব্যান্ডের সাথে যুক্ত থাকা সত্ত্বে ও তিনি ব্যান্ড থেকে ব্যাক্তি জেমসকেই অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আর এই সম্পর্কে জানতে আপনাকে বেশি কষ্ট করতে হবে না শুধু একটু ভেবে দেখুন ,আমরা কিন্তু নগর বাউল কিংবা ফিলিংস বলতেই আমরা বুঝি জেমসকে এবং চিনি ও শুধু জেমসকেই।
বাংলাদেশের রক মিউজিকে শিল্পী জেমসের সবচেয়ে বড় অবদানটা বোধহয় মানুষের কাছে রক মিউজিকের গ্রহণযোগ্যতা তৈরির ক্ষেত্রে। আজ আমাদের দেশে রক মিউজিকের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। কিন্তু জেমসের যাত্রাকালে মানে ৮০-৯০ দশকের দিকে আমাদের দেশে মোটেও জনপ্রিয়তা এখনকার মতো ছিল না। তখন শহরে সপ্তাহে ৮ -১০ টা কনসার্ট হবার মতো কোনো পরিবেশ ছিল না, আর সব থেকে বেশি অভাব ছিল রক মিউজিকের দর্শক যার ফলে কনসার্ট হলে ও তেমন দর্শক পাওয়া যেত না। তখনকার সময়ে রক মিউজিকটা ছিল শহরের গুটি কয়েক কিশোর-কিশোরীর গল্প,আড্ডার মধ্যেই আবদ্ধ ছিল। আর সেই সময় মিউজিকের সমালোচনাও হতো খুব বেশি। যার ফলে প্রবীণেরা ও ব্যান্ড সংগীত ভালো ভাবে গ্রহণ করে নি। তখনকার সময় জেমসের এই গান গুলোকে বা ব্যান্ড সংগীতকে অপসংস্কৃতির চর্চা বলে ও অনেকবার তার কাজ কে প্রশ্নবিদ্ধও করা হয়েছে। যার ফলে তখন তার ব্যান্ড সংগীতকে নিয়ে পথচলা ছিল অনেক কঠিন।
কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতার মাঝেই জেমস নিজেকে করে তুলেছে অনন্য। তখন জেমস তার গানের মধ্যে তৈরী করেন এক নতুন ভাষা ,যা সেই সময় দেশের সকলেই গ্রহণ করে নিয়েছিল খুব ভালো ভাবেই। দেশের ব্যান্ড সংগীতের কনসার্ট এর উন্মাদনার শুরুও এই জেমস এর হাত ধরেই। তখন তার কিছু গান যেমন দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘বাংলাদেশ’, ‘মীরাবাঈ’ সুন্দরীতমা আমার’, মান্নান মিয়ার তিতাস মলম’, ‘লেইস ফিতা লেইস’ খুব জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং এই গান গুলো তখন পাড়ার প্রত্যেকটি উৎসবে বাজাতে শুরু হয়। জেমস এর আমি তারায় তারায় রটিয়ে দিবো গানটির সাথে শুধু তখনকার রক গানের শ্রোতারাই শুধু মাথা দোলায়নি ,এই গানের সুর-কথার সাথে মাথা দোলিয়েছে দেশের সকল সকল অবস্থান এর সকল বয়সের মানুষ। তখন এলাকার মুরুব্বি যারা ব্যান্ডের গান বলতেই চিল্লাচিল্লি মনে করতো তারাও জেমস এর গানের এই কথা গুলোর সাথে ঠোঁট মিলিয়েছে। গানটি হলো , ভোরের তারা রাতের তারা মাকে জানিয়ে দিস/ অনেক কেঁদেছি/ আর কাঁদতে পারি না। তখন আস্তে আস্তে সকলের ব্যান্ডের রক গানের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হতে থাকে ,আর তখন জেমস এর গানের গ্রহণ যোগ্যতা ও অনেক বৃদ্ধি পেয়ে যায়।
আমাদের এই লিখার শুরুতেই বলেছি ,জেমস তার ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় জুড়ে, তার সব চেয়ে বেশি মনোযোগ ছিল তার নিজের সলো ক্যারিয়ারের দিকে। আর তাই নিজের সলো ক্যারিয়ার কিভাবে এগিয়ে নিবেন সেই চিন্তায় তিনি বেশি করেছেন। জেমস কখনই শুধু একটি বড় ব্যান্ড দলের স্বপ্ন দেখে নি। তিনি হতে চেয়েছিলেন জিম মরিসন, এরিক ক্লাপটন, মার্ক নফলারদের মতো একজন প্রতিষ্ঠিত সলো রক আর্টিস্ট হতে চেয়েছিলেন। আর জেমস তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে সেই স্বপ্নকেই সারা জীবন তাড়া করেছেন। তবে তিনি কত টুকু সফল হয়েছেন সেইটা বলার উপায় নেই, তবে এই স্বপ্ন তার থেকে ভালো বাস্তবায়ন অন্তত এই দেশে আর কেউ করতে পারে নি এইটা বলা যায় কোনো কিছু চিন্তা না করেই।তিনি শুধু বাংলা গানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন নি । তিনি বাংলা গানের পাশাপাশি করেছেন কিছু হিন্দি গান। আর সেই গান গুলোর জন্য বলিউডেও পেয়েছেন তুমুল জনপ্রিয়তা। তার করা বলিউডে হিন্দি গান গুলোর মধ্যে ভিগি ভিগি’, ‘চল চলে’, ‘আলবিদা’, ‘বেবাসি’ এই গানগুলোর মাধ্যমে মাতিয়েছেন পুরো বলিউড। তার বলিউডে করা ‘ভিগি ভিগি’ গানটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো যে এই গানটি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বলিউড টপচার্টের শীর্ষে ছিল।
জেমসের গানের সবথেকে অসাধারণত্বের জায়গা হলো তার গানের কথা। তার গানের কথা গুলো এতটাই ভালো ছিল যে ,তার গান একবার শুনলে মন ছুঁয়ে যেত। তার এই গান গুলো ও লিখা হতো অনেক যত্ন করে। তখন কার সময়ের সেরা সব গীতিকার মারজুক রাসেল, গোলাম মোরশেদ, প্রিন্স মাহমুদ জুয়েল,আসিফ ইকবাল, লতিফুল ইসলাম শিবলি, বাপ্পি খান, দেহলভি,এর মতো সুরকারদের তার জন্য আলাদা করে গান লিখতে হতো। আর এই জন্যই হয়তো জেমসের গানগুলো আজ ও বেঁচে রয়েছে ঠিক আগের মতোই। তার গান গুলো এখনকার সময়ের কিশোর বয়সের ছেলে- মেয়েদের কাছে ও অনেক জনপ্রিয়। জেমসের বের হওয়া ২০-২৫ বছর আগের গানগুলো এখন যারা কিশোর বয়সে নতুন করে পা দিচ্ছে তারা ও শুনছে খুব আগ্রহের সাথে। তার এই গানগুলো মাদকতা এত সময় পরেও এক বিন্দুও কমেনি যা আসলেই অবাক হবার মতো ।
আর এই জন্যই হয়তো জেমস শুধুমাত্র একজন শিল্পী হয়ে আটকে থাকেন নি। লম্বা কোঁকড়ানো চুল, কালো আলখেল্লা, হাতে গিটার, চোখ-মুখের কাঠিন্য এসবকিছু নিয়ে তিনি একজন রকস্টার।হয়েছেন সবার পছন্দের রকস্টার। সম্ভবত আমাদের আমাদের দেশের একমাত্র রকস্টার হচ্ছে জেমস।তার কারণ তিনি নিজেই একটি ব্র্যান্ড,আর নিজেকে পরিণত করেছেন একজন আইকন হিসেবে ।
Comments
Post a Comment